SLST : ‘শরীরটা ভালো নেই…’, মাথায় একটুকরো কাপড় বেঁধে বাড়ি ফিরলেন রাসমণি – slst job seeker rashmoni patra says she is not well


গ্রামের পাকা পথ ধরে ফিরছিলেন বহু চেনা ‘ঘরের মেয়ে’। মাথায় এটা লাল হলুদ ওড়না বাঁধা। তাঁর বুকফাটা হাহাকার আর কেশরাশি কেটে ফেলার সিদ্ধান্তে রীতিমতো কেঁপে উঠেছিল গোটা বাংলা। ‘চাকরি দিন’, ধর্মতলায় রাজপথের বুকে হাহাকার করেছিলেন তিনি।

কিন্তু, বাড়িতে সেই বোঝা নিয়ে ঢুকতে চান না কোলাঘাটের কোদালিয়া গ্রামের মেয়ে রাসমণি পাত্র। কিছুটা দূরেই সংবাদ মাধ্যমকে জানালেন, লড়াইটা ব্যক্তিগত নয়। তাই ব্যক্তিগত জীবনটাকেও তিনি এর থেকে দূরে রাখতে চান। তবে শ্বশুর-শাশুড়ি এবং বরের পক্ষেও মেনে নেওয়া কঠিন, তা বুঝিয়ে দিলেন রাসমণি

চাকরির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন SLST-র প্রার্থীরা। শনিবার তাঁদের ধরনা ১০০০ দিনে পা দিয়েছিল। আর এই দিনই মাথা কামিয়ে চাকরির জন্য কাতর আবেদন করেন রাসমণি। এক মাথা কালো চুল রাস্তায় গড়াগড়ি খেতে দেখে চোখে জল এসেছিল অনেকেরই।

সেই কাতর আর্জি পৌঁছেছিল রাজ্য শাসক দলের কাছেও। তড়িঘড়ি কুণাল ঘোষ ছুটে গিয়েছিলেন ধরনা মঞ্চে। এরপর তাঁর মধ্যস্থতায় সোমবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য রাজি হন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিকে রাজনীতি, প্রতিবাদের বাইরে বেরিয়ে রবিবার বাড়ি ফিরে গিয়েছেন রাসমণি। মাথা ঢাকা এক টুকরো কাপড়ে। তাঁকে দেখে চোখে জল প্রতিবেশীদের।

রাসমণির এক প্রতিবেশী বলেন, ‘মেয়েটা ছোট থেকেই কষ্ট করেছে। চাকরির জন্য দীর্ঘ চেষ্টা করেছে। ছেলেটারও বয়স কম। টিভিতে ওকে চুল কাটতে দেখলাম। আমার কান্না পেল (ডুকরে কেঁদে উঠলেন)। এত অযোগ্যদের চাকরি হয়! আর আমাদের মেয়েটার হবে না! চাকরির জন্য ওকে চুল কামিয়ে ফেলতে হবে!’

WB SLST Job : কাটবে নিয়োগজট? কুণালের হস্তক্ষেপে সোমেই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে SLST-র চাকরিপ্রার্থীরা
একই সুর শোনা গেল রাসমণির পাড়াতুতো কাকার কণ্ঠেও। তিনি বলেন, ‘চাকরির জন্য রোজ ও কলকাতায় যায়-আসে। ছেলেটাও তো খুবই ছোট। ও যোগ্য। সরকারের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত।’ এদিকে যাঁকে নিয়ে এই আলোচনা তিনি কী বলছেন? ক্লান্ত গলায় ফোনে রাসমণি এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, ‘আমি গ্রামে ফিরে এসেছি। শরীরটা ভালো নেই বলে আজ ধরনাস্থলে যেতে পারিনি। কাল মিটিং! দেখি কী হয়!’

বাড়িতে ফিরে তাঁকে দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ির কী প্রতিক্রিয়া? ভারাক্রান্ত গলায় রাসমণি বলেন, ‘যে কারও পক্ষেই মেনে নেওয়া কঠিন এটা অস্বীকার করা যায় না। ছেলেটাও অবাক।’ তবে সবশেষে লড়াইয়ে জয়ী হয়ে চাকরি মিলবেই, আত্মবিশ্বাস শোনা গেল রাসমণির কণ্ঠে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *