কী ঘটনা?
এক বা দু’হাজার নয়, গ্রাহকদের সঞ্চয়ের এক কোটি ২২ লাখ টাকা অনলাইনে গেম খেলে উড়িয়ে দিয়েছেন খোদ পোস্ট মাস্টার! শুনতে অবাক লাগলে বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে। এই ঘটনায় অভিযোগের তির সোনারপুরের জগদ্দল সাব পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার অমিত বড়ুয়ার দিকে। অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে, প্রতারণা, সরকারি তহবিল নয়ছয় সহ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক ধৃতকে সাতদিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
কী ভাবে সামনে এল পোস্ট মাস্টারের কীর্তি?
চলতি বছরই মে মাসে এই পোস্ট অফিসে বদলি হয়ে আসেন অমিত। এর আগে হরিণাভি পোস্ট অফিসে তিনি কর্মরত ছিলেন। জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে গ্রাহকের টাকার সরিয়ে অনলাইনে জুয়া খেলার কাজ। সম্প্রতি পোস্ট অফিসের তহবিল গরমিল ধরা পড়ার পরই বিষয়টি সামনে আসে। তহবিলে বিরাট অঙ্কের গরমিল ধরা পড়ায় সন্দেহ হয় ডাক বিভাগের আধিকারিকদের। তাঁরা তখনই সোনারপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর ভিত্তিতে সোমবার অমিতকে গ্রেফতার করা হয়। উচ্চশিক্ষিত অমিত ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন। তারপর পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পান। তাঁর এই কাণ্ডে অবাক অন্যান্য সহকর্মীরাও।
এই ঘটনায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে পোস্ট অফিসের গ্রাহকরাও। তাঁদের গচ্ছিত অর্থ নিরাপদ কি না, গ্রাহকদের মনে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই নিয়ে বারুইপুর সার্কেলের পোস্ট অফিস সুপারিন্টেনডেন্ট বলেন, ‘গ্রাহকদের থেকে এখনও কোনও অভিযোগ আসেনি টাকা খোয়া যাওয়ার। এলে তা খতিয়ে দেখা হবে। আমরা পৃথক তদন্ত করছি।’
জেরায় চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি ধৃতের
পুলিশি জেরার মুখে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন ধৃত পোস্ট মাস্টার। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের তিনি জানিয়েছেন, অনলাইনে গেম খেলে তিনি প্রথমে কয়েক লাখ টাকা হেরে যান। জিতে সেই টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে পোস্ট অফিসে গচ্ছিত টাকা দিয়ে গেম খেলতে থাকেন। এই করে সব টাকা খোয়া গিয়েছে। ধৃত পোস্ট মাস্টারের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে।