বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এক দিকে তাপমাত্রার পতন, অন্য দিকে শহরের বিভিন্ন জায়গা এবং শহরতলিতে জঞ্জালে আগুন ধরানো অব্যাহত। রয়েছে রাস্তাঘাট, পাড়ার দোকানে কয়লার উনুনে রান্নাও। তার ফলেই বাড়ছে বাতাসের বিষ। আতঙ্কের ব্যাপার হলো, যে দূষণ-কণা বেশি ক্ষতিকর, বাতাসে এখন তার মাত্রাই বেশি। এর ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা বাড়ছে। আগামী দিনে বাতাসে দূষণের মাত্রা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা পরিবেশবিদদের।
কালীপুজো-দীপাবলির সময় থেকেই শহরের বাতাস খারাপ থেকে খুব খারাপ হচ্ছিল। এক সময়ে দূষণে-মাত্রার নিরিখে দিল্লিকেও ছুঁয়ে ফেলেছিল কলকাতা। পরে বাজির দাপট কমায় দ্রুত নেমেছিল বাতাসের বিষ। কিন্তু তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমা শুরু করতেই বাড়ছিল বায়ুদূষণের মাত্রা। সপ্তাহ দুয়েক আগে দূষণ-মাত্রায় কলকাতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল শহরতলির বিভিন্ন এলাকা। কিন্তু নিম্নচাপের জেরে অকালবর্ষণে কলকাতার বাতাস বিশুদ্ধ হয়েছিল। বাতাসের দূষণ-মাত্রার পরিমাপক (একিউআই) ছিল ৫০-এর নীচে।
তবে সোমবার থেকেই শহরে বাড়তে শুরু করেছে বাতাসে বিষ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, সল্টলেক, নিউ টাউন এলাকায় একিউআই ছিল ৩৫০-র উপরে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, বালিগঞ্জ, ফোর্ট উইলিয়াম, যাদবপুর এলাকায় গড় একিউআই ছিল ২৫০-র কাছাকাছি। ময়দান এলাকায় সর্বোচ্চ একিউআই ছিল ৩২৬। শহরের অন্যত্রও সর্বোচ্চ একিউআই ৩০০-র উপরেই ছিল।
মূলত দূষণ-কণা পিএম (পার্টিকুলেট ম্যাটার) -১০ এবং পিএম-২.৫-কেই স্বাস্থ্যের পক্ষে সবথেকে ক্ষতিকর বলে ধরা হয়। তার মধ্যে পিএম-২.৫ হলো আরও ক্ষতিকর। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই দূষণ-কণা এতটাই সূক্ষ্ম যে শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে সরাসরি রক্তে মিশে যেতে পারে। তা থেকে বাড়তে পারে বিপদ। বিগত বেশ কিছু সময় ধরে দেখা যাচ্ছে যে, কলকাতা তথা শহরতলির বাতাসে পিএম-২.৫-এর মাত্রা পিএম-১০ এর থেকেও বেশি।