Bottle Gourd,লম্বায় ৬ ফুট! লম্বুজি লাউ নিয়ে সেলফি তোলার হিরিক – ranaghat resident deepak cultivated more than six feet long bottle gourd


গৌতম ধোনি কৃষ্ণনগর: টিঙ্কুজি নয়। লম্বুজি! তাকে দেখে রানাঘাটের বাসিন্দাদের কেউ কেউ নাম দিয়েছেন ‘সাপ লাউ’। কেউ বলছেন দৈত্য লাউ। কেউ আবার ডাকছেন ‘লম্বু কদু’ বলে। এক নেটিজেন দু’রকম লাউয়ের ছবি একসঙ্গে পোস্ট করে একটার নাম দিয়েছেন ‘সিভিক লাউ’।

মানে, বাজারে যেরকম গোল-লম্বা ছোট সাইজের লাউ পাওয়া যায়। অন্যটার নাম ‘আর্মি লাউ’। ইয়া বড় লম্বা। আমবাঙালির গড় উচ্চতাকে যা ছাপিয়ে যাবে। বাড়িতে বিশ জন সদস্য থাকলেও গোটা লাউ খেয়ে শেষ করতে পারবেন না। রানাঘাট শহরের কলেজপাড়ার বাসিন্দা দীপক, নার্সারিকে পেশা করলেও ইদানীং সব্জি চাষে হাত লাগিয়েছেন।

রামধনু আখ, লাল কলা, সুন্দরী কুল, শতমুখী আনারস, বারোমাসের কাঁঠাল, পেয়ারার সঙ্গে জুড়েছেন দৈত্যাকার লাউ। চাষের জমি অবশ্য তাঁর বাড়িতে নয়। রানাঘাট শহর থেকে আড়াই কিমি দূরে আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মনসাতলায়। সেখানেই ছ’ফুটের বেশি লম্বা লাউ চাষ করেছেন তিনি। দীপকের নার্সারি অবশ্য বাঞ্ছারামের বাগান নয়।

অনেকেই গাছ বা ফল নেড়েচেড়ে দেখছেন। বেশি ভিড় হচ্ছে ‘লম্বুজি’র সঙ্গে সেলফি তুলতে। বাজারে বিক্রি করার আগেই কেউ পাঁচশো, কেউ দু’শো টাকা দাম জানিয়ে গিয়েছেন।

দীপক বলেন, ‘লখনৌয়ে বেড়াতে গিয়ে এমন লম্বা জাতের লাউ দেখে অবাক হয়েছিলাম। ওখান থেকে বীজ কিনে এনে নার্সারির জমিতে লাগিয়েছিলাম। তিন মাসের মধ্যেই গাছে বড় বড় লাউ ফলেছে। একটা ছ’ফুট দুই ইঞ্চি, আর দুটো সাড়ে পাঁচ ফুট এবং পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি। লাউয়ের বেড় কোথাও সাত আট ইঞ্চি, কোথাও দশ বারো ইঞ্চি। গাছে আরও তিরিশটির বেশি লাউ ধরেছে। সেগুলো এখনও ছোট।’

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব্জি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অরূপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এরকম লম্বা লাউ উত্তরপ্রদেশের স্টেট এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটির নিজস্ব ভ্যারাইটি। ওখানকার গবেষকরা এটার নাম দিয়েছেন নরেন্দ্র শিবানী। এ লাউ খাওয়ার সুযোগ হয়নি বলে এখনও জানি না এর স্বাদ কেমন।’

তাঁর সংযোজন, আমাদের রাজ্যে ছোট আকারের লম্বা ও গোল দু’রকম লাউ দেখা যায়। এত বড় দৈর্ঘ্যের লাউ বাজারে কেটে বিক্রি করা ছাড়া অন্য উপায় থাকবে না বলে মনে হয়। রানাঘাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নারায়ণচন্দ্র দাস কিংবা স্থানীয় বাসিন্দা শিবু রায়-সহ অনেকেই তারিফ করেছেন পাড়ার ছেলে দীপকের এমন সব্জি চাষ দেখে।

শিবু বলেন, ‘এমনিতে লাউয়ের পুষ্টিগুণ অনেক। বিভিন্ন রোগে ভুগে আমরা অনেকে ইদানীং লাউ খাওয়া বাড়িয়েছি।’ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব্জি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, ডায়াবেটিক রোগীদের পক্ষে লাউ খুবই উপকারী। গ্যাস, অ্যাসিডিটি কমায়। গরমের দিনে লাউ-এর তরকারি খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। লাউয়ে পুষ্টিগুণ রয়েছে। জলের ভাগ বেশি থাকায় কিছু খনিজ লবণও থাকে।

Jhargram School : মিড-ডে মিল রান্নার সবজি ফলছে স্কুল প্রাঙ্গনে! পথ দেখাচ্ছে রাজাবাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়
এই লাউ চাষে কি খুব পরিশ্রম? দীপক বলেন, ‘একেবারেই না। বীজ পুঁতে চারা বের হওয়ার আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে গাছে লাউ ধরে যাবে। একটা গাছে অনেক লাউ হবে। আলাদা করে কোনও সার দিতে হয় না। শুধু দেখতে হয়, গাছের গোড়ায় বেশি জল যেন জমে না থাকে। সাধারণ লাউ চাষে রোগপোকার আক্রমণ হয়। এতে সে ভয়ও নেই।’

লম্বুজির জন্য আগে আট ফুট উঁচু মাচা করেছিলেন দীপক। কিন্তু লাউয়ের দৈর্ঘ্য দিনকে দিন যেভাবে বাড়ছে মাচা আরও উঁচু করার কথা ভাবছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘লম্বায় বাড়লেও লাউ কিন্তু এক্কেবারে কচি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *