পরীক্ষায় জীর্ণ জলাধারের খোঁজ মিললে তা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। এমন বেশ কয়েকটি জলাধার রয়েছে আসানসোলে। স্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও ডুরান্ড ইনস্টিটিউটের কাছে, দোমোহনি রেলওয়ে ও অফিসার্স কলোনিতে জল সরবরাহের জন্য রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন জলাধারগুলি।
জামালপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ থেকে ওই জলাধারগুলো আনা হয়েছিল। লোহার চাদরে ঘেরা এই রিজ়ার্ভারগুলির জলধারণ ক্ষমতা এক লক্ষ গ্যালন বা তারও বেশি। ১৯২৫ সালে বসানো ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে লেখা লোহার জলাধার রয়েছে ডুরান্ড রেল কলোনিতে। এই জলাধারটির চেহারা দেখলেই বোঝা যায় গত কয়েক বছরে এর কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি।
জলাধারের চারদিকে জড়িয়ে রয়েছে প্রচুর লতা-পাতা। লোহার উপরে জমেছে শ্যাওলা। এমনকী জলাধারের উপরের ছাউনির একটি অংশ নেই। দোমোহনি জলাধারের চেহারা দেখলেই বোঝা যায়, ওই রিজ়ার্ভারটিরও বহু দিন রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। আসানসোল স্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে থাকা জলাধারটির অবস্থাও এক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সীতারামপুর স্টেশনে রেল লাইনের মাঝে থাকা বিশাল জলাধারের অবস্থাও বেহাল। তাঁরা জানাচ্ছেন, বর্ধমানের মতো এই সব জলাধারগুলি যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে সাধারণ নাগরিকদের। বেশ কিছু জলাধার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপর। সেখান দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত।
এই জলাধারগুলি নিয়ে রেল শ্রমিক সংগঠনের এক নেতা বলেন, ‘আমরা রেলের আধিকারিক পর্যায়ের বৈঠকে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছি। বাইরে থেকে জলাধারগুলি দেখলেই বোঝা যায়, সে ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হয় না।’ এ প্রসঙ্গে আসানসোল ডিভিশনের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার পদমর্যাদার এক আধিকারিক বলেন, ‘এ সব নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা বারণ রয়েছে। যা বলার জনসংযোগ আধিকারিক বলবেন।’
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রর বক্তব্য, ‘আসানসোল ডিভিশনে আমাদের বিভিন্ন স্টেশন এলাকায় ৮টি এবং স্টেশন চত্বর বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় ২৩টি এই ধরনের জলাধার আছে। গোটা আসানসোল ডিভিশনে ছোট বড় মিলিয়ে এমন জলাধারের সংখ্যা প্রায় ৮০। আগামী সপ্তাহ থেকেই আমাদের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এই জলাধারগুলি পরীক্ষা করে দেখবেন।
কোনগুলিকে রাখা হবে এবং কোনগুলিকে ভেঙে ফেলা হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। রক্ষণাবেক্ষণের উপর আরও জোর দেওয়া হবে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ যে হয় না এই অভিযোগ ঠিক নয়।’