বনকর্মীরা সচেতন করে বলেন, ‘পরিযায়ীরা এসেছে বিদেশ থেকে। তারা আমাদের অতিথি। এদের সুরক্ষিত রাখতে হবে। যদি কেউ এদের আঘাত বা হত্যা করেন তা হলে বন্যপ্রাণ আইন ১৯৭২ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘বনবীথি’র অভিযোগ, এই এলাকার মেড়তলা চর, দেবনগর চর ও রাজার চরে থাকা বিলুপ্তপ্রায় বুনো শুয়োর ও বুনো খরগোশ শিকারের মতো ঘটনা ঘটছে।
সংস্থার সদস্য স্থানীয় পক্ষীবিশারদ সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘এবার এতটাই কচুরিপানা যে পাখি বসারই জায়গা পাচ্ছে না। পিকনিক স্পট ও ছাড়িগঙ্গায় যে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির দেখা মেলে সেই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।’ যদিও স্থানীয় বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কচুরিপানা পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘পাখিরালয়ে এসে পার্কে অনেকে বসেন। সেখানে শীতকালীন ফুলগাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছি।’
পূর্বস্থলীর চুপি ও কাষ্ঠশালীতে ছাড়িগঙ্গায় শীতে আশ্রয় নেয় দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি। গত কয়েক বছরে পক্ষীপ্রেমীদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছে চুপির পাখিরালয়। পাখি দেখতে প্রচুর পর্যটক আসেন পাখিরালয়ে। এলাকার মাঝিরা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে নদীতে ঘুরিয়ে পাখি দেখায় পর্যটকদের। বড়দিন থেকে নববর্ষ পর্যন্ত পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে। এবারে জাঁকিয়ে শীত পড়ায় প্রচুর পর্যটক আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনেকে পিকনিকও করেন। নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখির পাশাপাশি বাঘরোল, ভোঁদর, শেয়ালের মতো প্রাণীরও দেখা মেলে পূর্বস্থলীর চুপির পাখিরালয়ের আশপাশে। এই মরশুমের প্রথমে তেমন শীত না-থাকলেও সপ্তাহখানেক জাঁকিয়ে শীত পড়ায় পর্যটকদের আনাগোনাও বেড়েছে বেশ খানিকটা।
কলকাতা থেকে আসা পর্যটক পক্ষীপ্রেমী মাধব সরকার বলেন, ‘প্রতিবারই চুপিতে আসি। এখানে সব পাখি একসঙ্গে আসে না। ধাপে ধাপে পরিযায়ীরা পৌঁছে আস্তানা নেয় পাখিরালয়ে। অন্যান্য বার এই সময়ে অনেক পরিযায়ী পাখি চলে এসেছিল। কিন্তু এবার কচুরিপানার কারণে পাখি দেখতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অন্যান্যবার নাগালেই পাখির ঝাঁকের দেখা মিললেও এবারে তা হয়নি।’