ধৃতরা সকলেই ওডিশার বাসিন্দা। ধৃতদের সোমবার বারাসত আদালতে তোলা হলে বন দফতরের হেফাজতে পাঠান বিচারক। ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণ আইনের ৯ এবং ৩৯ ধারায় মামলা রুজু করেছে জেলা বন দফতর। একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের চামড়া বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে ওডিশা থেকে ওই তিন পাচারকারী এসেছিল মধ্যমগ্রামে।
চামড়া বিক্রির জন্য পাচারকারীদের সঙ্গে ক্রেতার ১০ লক্ষ টাকার রফা হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার গভীর রাতে এসপি ফরেস্ট প্রোটেকশনের নেতৃত্বে জেলা বন দফতরের মুখ্য আধিকারিক রাজু সরকার, বারাসতের রেঞ্জ অফিসার ও অন্যান্য আধিকারিকদের ১০ জনের একটি দল অভিযান চালায় মধ্যমগ্রাম চৌমাথায়। সেখান থেকেই বমাল সমেত তিন পাচারকারী ধরা পড়ে।
বন্যপ্রাণী শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। তার পরেও পুলিশ এবং বন দফতরের নজর এড়িয়ে চোরাপথে বন্যপ্রাণী শিকার চলছেই। চিতাবাঘের চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদাও বিরাট। বন দফতর সূত্রে জানা গেছে, একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজারে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের লোভেই সক্রিয় পাচারকারীরা।
বন্যপ্রাণী শিকার ও পশুর চামড়া বেআইনি ভাবে মজুত এবং বিক্রির অভিযোগে পাচারকারীদের তিন থেকে সাত বছরের জেল হেফাজতের নিদানও রয়েছে বন্যপ্রাণ আইনে। ধৃতদের জেরা করে চিতাবাঘের চামড়া পাচারে আর কেউ যুক্ত আছে কি না, চামড়াটা ধৃত পাচারকারীরা কোথা থেকে সংগ্রহ করেছিল, কার কাছেই বা সেটা ১০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তাও জানার চেষ্টা করছেন আধিকারিকরা।
এই প্রসঙ্গে জেলা বন দফতরের মুখ্য আধিকারিক রাজু সরকার বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া চিতাবাঘের চামড়া কতদিনের পুরোনো, সেটা জানতে পাঠানো হবে জুয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দপ্তরে। বিষয়টি জানার পর এটিকে জেলা বন দপ্তরেই রাখা হবে।’
জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধক্ষ্য একেএম ফারহাদ বলেন, ‘চিতাবাঘের চামড়া বাংলাদেশের ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে পাচারের ছক ছিল পাচারকারীদের। কিন্তু তার আগেই ওদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’