একদিকে ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হতে চলেছে পানীয় জল প্রকল্প। অন্যদিকে, ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শুরু হয়েছে গভীর নর্দমার সাহায্যে নিকাশি সংস্কারের কাজ। দু’টি কাজ সম্পন্ন হলে আগামী দিনে নিউ ব্যারাকপুরের মানুষ অনেকটাই মুক্তি পাবে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।
ছোট্ট শহর হলেও বিমানবন্দর, মধ্যমগ্রাম লাগোয়া নিউ ব্যারাকপুরে দিন দিন বাড়ছে জনবসতি। কিন্তু জনবসতি বাড়লেও পানীয় জল এখানে বেশ অপ্রতুল। বিশেষ করে গরম কালে চাহিদা মতো পানীয় জলের জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুর কর্তৃপক্ষকে। তাঁদের দাবি, বাম আমলে পুর এলাকায় দু’টি ওভারহেড ট্যাঙ্ক থাকলেও তৃণমূল আমলে সেই সংখ্যা আরও তিনটি বাড়ানো হয়েছে।
কিন্তু তার মধ্যে বাম আমলে তৈরি ওভারহেড ট্যাঙ্ক দু’টির অবস্থাও ভালো নয়। এই পরিস্থিতিতে ওই দু’টির নতুন করে সংস্কারের পাশাপাশি আরও একটি ওভারহেড জলের ট্যাঙ্ক এবং একটি আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওভারহেড ট্যাঙ্কে ২৭২ কিলোলিটার জল ধারণ করা সম্ভব হতো। তা সংস্কার করে জলধারণ ক্ষমতা বাড়িয়ে করা হবে ১ হাজার ২০০ কিলোলিটার।
১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও ২৭২ কিলোলিটারের পরিবর্তে ৭৫০ কিলোলিটার জল ধারণ করা হবে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে যে আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটি সম্পন্ন হলে ৭ হাজার ৩১০ কিলোলিটার জল স্টোর করা যাবে। অন্যদিকে, সঠিক নিকাশি না থাকার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই ফি বছর জলমগ্ন হয়ে পড়ে নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকা।
বিশেষ করে রেললাইন বরাবর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের তীব্র সমস্যায় পড়তে হয়। সেই দুর্ভোগের দিনও এ বার শেষ হতে চলেছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। ৮ নম্বর রেলগেটের পূর্ব ও পশ্চিম পাড় বরাবর গভীর নর্দমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। যেটি নোয়াই খালে গিয়ে মেশানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিস্তীর্ণ এলাকার জল সহজেই নর্দমার মাধ্যমে নোয়াই খালে গিয়ে পড়বে। ফলে জল জমার সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে বলে মনে করেন পুর কর্তৃপক্ষ।
একই মত রেললাইন লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদেরও। তাঁদের কথায়, ‘ড্রেনটি এতদিন কাঁচা ছিল। পাকা ড্রেনের কাজ হয়ে গেলে জল জমার সমস্যা যেমন মিটবে, তেমনি মশার উপদ্রবও কমবে অনেকটা।’ নিউ ব্যারাকপুরের পুরপ্রধান প্রবীর সাহা বলেন, ‘মডেল নিউ ব্যারাকপুর তৈরির এটিও একটি ধাপ। একদিকে পানীয় জলের জন্য নতুন প্রকল্প, অন্য দিকে নিকাশির মাধ্যমে জল জমার সমাধান উন্নততর নিউ ব্যারাকপুরকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’