পর্যটক তো দেখা নেই, একটার পর একটা হোটেলের রুম খুলতেই বেরিয়ে আসছে মহিলারা। বড়দিন ও পয়লা জানুয়ারি আগেই অভিযান চালিয়ে বড়সড় মধুচক্রের পর্দা ফাঁস করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। অভিযান চালিয়ে হোটেলের দুই লিজ মালিক সহ ৭ জন’কে গ্রেফতার করল মন্দারমণি উপকূল থানার পুলিশ। পাশাপাশি ১৬ যুবতীকে উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তরা হল দুই ভাই হোটেলের লিজ মালিক মন্দারমণির ডেরা গ্রামের সমীর প্রধান ও সোমনাথ প্রধান। বাকিরা হল সুবেড়িয়ার গ্রামের মির্জা সাত্তার বেগ, জুনপুট উপকূল থানার ছোট বানতলিয়া গ্রামের কার্তিক জানা, কাঁথির মহিষাগটের শুভঙ্কর গিরি ও মহিষামুণ্ডা গ্রামের শুভময় পণ্ডা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে তারক মাঝি। উদ্ধার যুবতীদের বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, দার্জিলিং, ক্যানিং, বর্ধমান ও পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির বাসিন্দারা। বুধবার অভিযুক্তদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক জামিন নাকচ করে ৩ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। উদ্ধার ১৬ জন মহিলাকে হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
সূত্রের খবর, বড়দিন ও পয়লা জানুয়ারি উপলক্ষে সৈকত নগরী সহ পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়বে। আর সেই সুযোগে কিছু অসাধু হোটেল ব্যবসায়ী দেহ ব্যবসার কাজে নেমে পড়েছে। মোটা টাকার বিনিময়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা যুবতীদের দেহ ব্যবসার কাজে লাগাতে সক্রিয় হচ্ছেন। এদিকে সক্রিয় রয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। তাজপুরের একটি হোটেল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেহ ব্যবসার কাজে লাগানোর জন্য যুবতীদের এনে রাখা হয়েছিল।
মঙ্গলবার রাত ৮ টা নাগাদ কাঁথি মহাকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা নেতৃত্বে রামনগরের সি আই পবিত্র কুমার গাঙ্গুলী, মন্দারমণি উপকূল থানার ওসি দেবব্রত বেরা সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী তাজপুরে ওই হোটেলে হানা দেয়। তারপরেই অবাক হয়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা। পর্যটক তো দেখা নেই, একটার পর একটা হোটেলের রুম খুলতেই বেরিয়ে আসছে দেহ ব্যবসায়ীরা। হোটেল কর্মীরা পালানোর চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আগে থেকেই পুরো হোটেল ঘিরে রেখেছে পুলিশ বাহিনী। তারপরে ১৬ জন যুবতীকে উদ্ধার করে ও হোটেলের লিজ মালিক সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা বলেন ‘তাজপুরের একটি হোটেলে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দেওয়া হয়। সেখান থেকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা ১৬ জন যুবতীকে উদ্ধার করা হয়েছে।’ পাশাপাশি হোটেলের দু’জন লিজ মালিক সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ঘটনা আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা, অন্য কোন হোটেলে যুবতী রাখা হয়েছে নাকি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।