ফাঁকা রাস্তায় সিগারেট খাওয়া যায়? প্রকাশ্যে ধূমপানে বঙ্গে কত টাকা জরিমানা দিতে হয় জানেন? – smoking on public places violation of section 4 of the cotpa details


ফের প্রকাশ্যে ধূমপান ঠেকাতে অভিযান শুরু করেছে রাজ্যের একাধিক জেলার স্বাস্থ্য দফতর। তাদের দাবি, আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। চালানো হয়েছিল প্রয়োজনীয় প্রচারও। এ বার শুরু হল জরিমানা আদায়। ধরা পড়লেই দিতে হচ্ছে ২০০ টাকা। বুধবার কাটোয়ার হাসপাতাল চত্বরে ধূমপান করায় জরিমানা করা হল ধূমপায়ীদের। মোট ১৬ জনকে প্রকাশ্যে ধূমপানের জন্য জরিমানা করা হয়। এরকম অভিযান যদিও আগেও হয়েছে।ন্যাশনাল টোবাকো কন্ট্রোল পোগ্রামের ডিস্ট্রিক্ট কনসালটেন্টরাও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও রয়েছেন।

জেলার চিত্র

একাধিক জেলার সদরেই দেখা যায়, ইতিউতি বিড়ি-সিগারেট-গুটখার গুমটি রয়েছে। প্রকাশ্যেই চলে ধূমপান। কমবয়সী ছেলেরাও নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। শুধু প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ ধূমপানেও বিপদ রয়েছে। সবদিক দেখে অভিযান শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশের যৌথ দল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘এখন স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের একাংশও তামাকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। সরকারি একটি পরিসংখ্যান বলছে, দেশে ১০০ জন ক্যানসার চিকিৎসাধীন রোগীর মধ্যে ৪০ জন তামাক ব্যবহারজনিত।’ শহর, শহরতলির স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেপিঠে বিড়ি-সিগারেট-গুটখার দোকান রয়েছে। পয়সা দিলেই মেলে তামাকজাতীয় সব বস্তু। প্রকাশ্যে চলে ধূমপান। নেশার আসর বসে। প্রসঙ্গত, অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে নেশার বস্তু বিক্রি করলে সাজার নিদান রয়েছে। জরিমানার নিদানও রয়েছে।

তামাকের ক্ষতি

তামাক ব্যবহারের ফলে মানব শরীরের ক্ষতি হয় না, এমন কোনও অঙ্গের উল্লেখ করা মুশকিল। হৃদরোগের মতো ভয়ানক ব্যাধিরও জন্ম হয়। ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান। দেশে প্রতি ঘন্টায় দু’ জনের মৃত্যু হয় ধূমপান ও তামাক সেবনের কারণে। ধোঁয়াযুক্ত তামাক জাতীয় দ্রব্য হল বিড়ি, সিগারেট, হুক্কা, চুরুট। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে বহু বিজ্ঞাপন সত্ত্বেও অনেকেই এখনও ধূমপান ছাড়ার ব্যাপারে আগ্রহী নন এবং রাস্তাঘাটে তাঁদের সিগারেট থেকে আশপাশের মানুষ ‘প্যাসিভ স্মোকার’ বা পরোক্ষ ধূমপায়ী হন। এতে তাঁদের সমপরিমাণ শারীরিক ক্ষতি হয়। যদিও এখন প্রশ্ন, এই অভিযান ক’দিন চলে। কারণ, এর আগেও কয়েক মাস আগে এই অভিযান শুরু হয়ে তা আবার থেমে যায়। ফলে অবস্থা কিন্তু তেমন বদলায়নি। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, কিছুটা হলেও চিত্রটা বদলেছে।

প্রকাশ্য রাস্তায় সিগারেট খাওয়া বৈধ?

দেশ তথা রাজ্যে জনসমক্ষে (পাবলিক প্লেসে) ধূমপান করা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। ২০০৩ সালের ‘সিগারেট এবং অন্যান্য তামাক পণ্য আইন’-র ধারা ৪ অনুযায়ী, প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিষিদ্ধ। এই আইন পালন না করলে, ধূমপানকারী এবং সে জায়গার দায়িত্বে থাকা মানুষটিরও প্রয়োজনে শাস্তি হতে পারে।

পাবলিক প্লেস কোনগুলি?

‘সর্বজনীন জায়গা’ বা ‘পাবলিক প্লেস’ হল যেখানে অবাধে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারে এমন জায়গা। যেটা ব্যক্তিগতভাবে অধিগ্রহণযোগ্য নয়। ফলে অডিটোরিয়াম, হাসপাতাল, রেলওয়ে স্টেশন, সরকারি দফতর, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, লাইব্রেরি, ক্যান্টিন, ব্যাঙ্ক, ক্লাব, খেলার মাঠ থেকে রাস্তা সবই পাবলিক প্লেস। তবে SOP অনুযায়ী, কিছু পাবলিক প্লেসে ‘ধূমপান করা যাবে না’ একটি সাইনবোর্ডে প্রদর্শিত করা উচিত। বস্তুত, পাবলিক প্লেসে কোনও ধূমপান স্থান থাকতে পারে না। তবে হোটেল এবং রেস্তোরাঁর মালিক কিছু জায়গায় ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। এরজন্যও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে।

১৯৯১ সালে কেরালা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ প্রকাশ্যে ধূমপান নিয়ে প্রথম একটি রায় দেন। হাইকোর্ট জানিয়েছিল, পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা সংবিধানের ধারা ২১ লঙ্ঘন করে। ভারতের প্রথম ধূমমুক্ত শহর হয়েছিল চণ্ডীগড়। পরে সিমলা, সিকিম সহ আরও বেশ কিছু রাজ্যে প্রকাশ্যে সিগারেট খাওয়ার উপর বিধি নিষেধ রয়েছে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *