Arjun Singh : বাহুবলী অর্জুনের রাশ কি আলগা শিল্পাঞ্চলে? – arjun singh under pressure ahead of 2024 lok sabha election


এই সময়: অবাঙালি অধ্যুষিত ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বাম আমলে দাপট ছিল সিপিএম নেতা তড়িৎ তোপদারের। পরে তৃণমূলের জন্মের পর বামদুর্গে সিপিএমের চোখে চোখ রেখে লড়াই করে নজরে আসেন অর্জুন সিং। বহু বছর ধরেই শিল্পাঞ্চলে তৃণমূল ও অর্জুন সিং ছিল পরস্পরের পরিপূরক।

শুধু নেতা নয়, বাহুবলী নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন অর্জুন। কিন্তু তাঁর বাহুর বল ক্রমশই আলগা হচ্ছে শিল্পাঞ্চলে। লোকসভা ভোটের আগে দলের মধ্যে কোণঠাসা অর্জুন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এই মুহূর্তে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এবং তার পরবর্তী কিছু সময়ে বিজেপিতে থাকা অবস্থায় অর্জুন সিং এবং আজকের অর্জুন সিংয়ের ক্ষমতায় এই মুহূর্তে বিস্তর ফারাক। মাত্র বছর দুয়েকের ব্যবধানে বিজেপি ছেড়ে যে আশায় তিনি তৃণমূলে ফিরেছিলেন, সেই আশাও বিলীন প্রায়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই কার্যত তাঁকে বাদ দিয়ে আবর্তিত ব্যারাকপুরের রাজনীতি।

রাজনৈতিক মহলের কথায়, এমনটা হওয়ারই ছিল। কারণ, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের পিঠে ছুরি মেরে অর্জুনের বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টি ভালো ভাবে নেয়নি এলাকার মানুষ। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বরং নিজের সাংসদ এলাকার সাতটি বিধানসভা আসনে কেবল ভাটপাড়ায় পুত্র পবন সিং ছাড়া বিজেপির কোনও প্রার্থীকেই জেতাতে পারেননি তিনি। গেরুয়া শিবিরে বিশেষ সুবিধা না পেয়ে দু’বছরের মধ্যেই তাঁর মোহভঙ্গ হয়।

তৃণমূলে ফিরে এলেও আগের দাপট ফিরে পাননি তিনি। ততদিনে তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করে নিয়েছে তৃণমূল। ২০০১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একটানা প্রায় দু’দশক ভাটপাড়ার বিধায়ক এবং ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভাটপাড়ার পুরপ্রধানের দায়িত্বে ছিল অর্জুন। কিন্তু দলবদলের এই পর্বে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্যের সঙ্গেই অর্জুন সিং হারিয়েছেন ভাটপাড়া পুরসভার কর্তৃত্ব। শিল্পাঞ্চল কেন্দ্রিক শ্রমিক সংগঠনেও তাঁর রাশ আলগা হয়েছে অনেকটা।

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, অর্জুন হয়তো ভেবেছিলেন, তৃণমূলে ফিরে এলে ফের আগের মতোই নিজের রাশ ধরে রাখতে পারবেন এলাকায়। কিন্তু দল যে তাঁকে আগের মতো গুরুত্ব দিতে চাইছে না, তা বিক্কি যাদব খুনে ভাইপো পাপ্পু সিংয়ের গ্রেফতারিতেই স্পষ্ট। অর্জুনের সমস্ত রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কাজকর্মের ছায়াসঙ্গী পাপ্পুকে গ্রেফতার তাই আরও অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছে বাহুবলী নেতাকে।

বিক্কি খুনে গ্রেফতার অর্জুনের ভাইপো
অর্জুনের প্রতি শিল্পাঞ্চলের মানুষের সমর্থনের ভিতও যে আলগা হয়েছে তার প্রমাণ মিলেছে শুক্রবার। এ দিন পাপ্পুকে আদালতে তোলার পর সাংসদের অনুগামী বলে যারা ভিড় করেছিলেন ব্যারাকপুর আদালতে, তাদের মধ্যে অনেকেই ২০১৯ সালে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। পরে অর্জুন তৃণমূলে ফিরলেও তৃণমূলের তরফে তাদের কাউকেই এখনও গ্রহণ করা হয়নি।

দলে ও এলাকায় কোণঠাসা হয়ে পড়া অর্জুন জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামকে তাই অলআউট আক্রমণে নেমেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিক্কি খুনে সোমনাথের গ্রেফতারির দাবি তুলে অর্জুন এ দিন বলেন, ‘দলের পতাকা সরিয়ে নিলে এক সেকেন্ডও এরা থাকতে পারবে না।’ গোটা বিষয়টি তিনি দলনেত্রীকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সোমনাথও পাল্টা আক্রমণ করতে ছাড়ছেন না। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘যাকে ছাড়া ব্যারাকপুর চলত না বলে বলা হচ্ছে, তার অনুপস্থিতিতেই ব্যারাকপুর লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে ২০২১ সালে ছ’টিতে তৃণমূলের প্রতিনিধি জয়লাভ করেছেন। আগামী দিনে শিল্পাঞ্চলে দল আরও বেশি শক্তিশালী হবে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *