কিন্তু নয়া আইনের গেড়োয় পুরো ছবিটাই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল বৃহস্পতিবার। এদিন দিনভর ড্যাম সংলগ্ন মিলেনিয়াম পার্ক ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় ৬০টি দোকান বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিলেন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। কারণ, মাইথন ড্যামের সুরক্ষা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে গোপন সূত্রে খবর এসেছে সিআইএসএফ-এর কাছে। তার জেরে সমস্ত অস্থায়ী দোকান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিসি। আর তাতে অনুঘটকের কাজ করেছে ২০২১-এর ড্যাম সেফটি অ্যাক্ট।
জানা গিয়েছে, অনুমোদনহীন এই সব অস্থায়ী দোকানগুলিতে বহু আগে নোটিস দিয়েছিল ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। নোটিসের নির্দেশ অনুযায়ী জায়গা খালি করার সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে দু’সপ্তাহ আগে। দোকানদারদের এ নিয়ে সতর্ক করতে মাইকে ঘোষণাও করা হয়েছিল বলে ডিভিসি সূত্রে খবর।
তার পরেই বৃহস্পতিবার ৬০টি দোকান বা অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা হয় বুলডোজ়ার দিয়ে। এদিন উচ্ছেদের আগে ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন একাধিক দোকানদার। কিন্তু ডিভিসি-র নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ও ব্যাপক সংখ্যায় সিআইএসএফ বাহিনীর উপস্থিতিতে তাঁদের দাবি-দাওয়া চাপা পড়ে যায়।
উচ্ছেদ অভিযান প্রসঙ্গে ডিভিসি মাইথনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) অনুপ পুরকায়স্থ বলেন, ‘সিআইএসএফের কাছে এই বাঁধের নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে যা, ডিভিসি-র সর্বোচ্চ আধিকারিকদের তারা জানিয়েছে। তার উপর ২০২১-এর ড্যাম সেফটি অ্যাক্ট অনুযায়ী ড্যামের আশপাশে কোনও ধরনের অস্থায়ী বা স্থায়ী দোকান, বাড়ি নির্মাণ করা আইন-বিরোধী কাজ। ডিভিসি-র কোনও অনুমতি না-নিয়েই মাইথনে একের পর এক দোকান গড়ে উঠেছে। এমনকী এখানে যে পার্কিং ফি নেওয়া হয় সেটাও অবৈধ।’
এদিকে, উচ্ছেদের বিষয়ে জানতে পেরে নিরসার প্রাক্তন বিধায়ক অরূপ চট্টোপাধ্যায় মাইথনে পৌঁছন। উচ্ছেদের বিরোধিতা করে দোকানদারদের পাশেও দাঁড়ান তিনি। তিনি জানতে চান, আগামী দিনে কি পশ্চিমবঙ্গের দিকে লেফ্ট ব্যাঙ্কে ড্যামের কাছাকাছি অস্থায়ী দোকানগুলিও ভেঙে ফেলা হবে? এ ব্যাপারে ডিজিএমের বক্তব্য, ‘ড্যামের কাছাকাছি যাঁরা অবৈধ ভাবে রয়েছেন তাঁদের সকলকেই নোটিস দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও উচ্ছেদের কাজ চলবে।’
ওদিকে, কল্যাণেশ্বরী অঞ্চলের তৃণমূল নেতা মনোজ তিওয়ারি বলেন, ‘শীতের মরশুমে যদি ফের এ ভাবে দোকানি, ব্যবসায়ীদের হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলে তবে বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে এর বিরোধিতা করা হবে।’