Bankura District : বেলুড় মঠের সন্ন্যাসী থেকে সংসার জীবনে ফেরা! যাদবপুরের প্রাক্তনী এখন ‘বিনা পয়সার মাস্টার’ – jadavpur university ex student presently teaching bankura student without fees


তখন ২০০০ সাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়ার প্ল্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারিং স্নাতক হলেন এক তরুণ। পড়াশোনা শেষের পর মোটা বেতনের চাকরি সহজেই জোটাতে পারতেন। কিন্তু না, বাস্তবিক জীবন থেকে নিজেকে আলাদা করে সম্পূর্ণ উলটো পথে হাঁটেন বাঁকুড়ার রাজর্ষি চৌধুরী। বেলুড় মঠে তিনি সন্ন্যাস ধর্ম গ্রহণ করেন। তারপর দীর্ঘ ছয় রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ন্যাসী জীবন কেটেছে। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা ফের তাঁকে সাংসরিক জীবনে ফিরে আসতে বাধ্য করে। বাঁকুড়ায় ফিরে এসে ‘বিনা পয়সার মাস্টার’ হিসেবেই খ্যাতি লাভ করেছেন তিনি।

‘বিনা পয়সার মাস্টার’ রাজর্ষিকে নিয়ে চর্চা

বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী ব্লকের বোন্দলহাটি গ্রামের বাসিন্দা রাজর্ষি। ছোটবেলা থেকে তিনি মেধাবী পড়ুয়া ছিলেন, পরিবার সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। কিন্তু ছোট থেকেই আধ্যাত্মবাদ তাকে আঁকড়ে ধরেছিল তাঁকে। পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে আধ্যাত্মিক আলোচনা করেই দিন কাটত রাজর্ষির।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা প্রতিষ্ঠান থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করে বিরাট কেরিয়ার ও অর্থ উপার্জনের সুযোগকে ত্যাগ করা মোটেই সহজ কথা নয়। স্বাচ্ছন্দের জীবনকে পরিত্যাগ করে আধ্যাত্মবাদে ব্রতী হয়ে দীর্ঘ কয়েক বছরের যাত্রা রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসী হিসেবে কাজ করেন রাজর্ষি। কিন্তু অসুস্থতার কারণে ফের সংসার জীবনে ফিরে আসতে হয় তাঁকে। কিন্তু থেমে থাকেননি রাজর্ষি। বিনা পয়সায় গ্রামের পড়ুয়াদের পড়াতে শুরু করেন। মূলত বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় পড়ান রাজর্ষি। সেখান থেকেই ‘বিনা পয়সার মাস্টার’ হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামের নতুন প্রজন্মের ছেলেদের কাছে তিনি খুব প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছেন।

কী বললেন রাজর্ষি?

‘বিনা পয়সার মাস্টার’ বলেন, ‘১৯৯৬-র জয়েন্ট এন্ট্রান্সে আমি ৭৮১ র‌্যাঙ্ক করেছিলাম। তারপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। ২০০০ সালে পাশ করেছিলাম। রামকৃষ্ণদেব ও স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে জেনে মঠে যোগ দিয়ে। সেখানে সন্ন্যাসী জীবনে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু শিখেছি। এখানকার পড়ুয়াদের বিনা পয়সায় পড়িয়ে খুবই ভাল লাগে। এটাও এক ধরনের সেবা।’

রাজর্ষির ছাত্র তৌফিক মণ্ডল বলে, ‘স্যার আমাদের কাছে খুবই প্রিয়। ওঁর কাছে পড়তে খুবই ভাল লাগে। উনি আমাদের থেকে কোনও পারিশ্রমিক নেন না। স্যারের কাছে পড়াশোনা চালিয়ে যাব। যতদিন পড়াশোনা করব, স্যারকে আমাদের পাশে সবসময় প্রয়োজন। স্যারের থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *