কাস্ট সার্টিফিকেট,এত ভুয়ো কেন? কাস্ট সার্টিফিকেটে ‘জল’ রুখতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত রাজ্যে – recruitment order issued by bcw department to stop issuing false caste certificates


রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে দুই দফতর এবং তাদের কাজ নিয়ে মাঝে মধ্যেই প্রশ্ন শোনা যায়। এক, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। দুই, রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। জমির মিউটেশন অথবা জমির হাতবদলের মতো কাজকর্ম করতে বিএলএলআরও অফিসের কর্মী-অফিসারদের একাংশের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ শোনা যায় বারবার। দ্রুত কাজ সম্পন্নে সাধারণ মানুষ অনেক সময়ে সেই টাকা দিয়েও দেন। সম্প্রতি আরও বড় বড় অভিযোগও সামনে এসেছে। এরসঙ্গে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরেও নীচুতলার কর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। রাজ্যে সাম্প্রতিককালে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্রের বাড়বাড়ন্ত খুবই চর্চার বিষয়। একাধিক জেলায় প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের বিষয়টিতে মধ্যস্থতা করতে হয়েছে।

কেন বেড়েছে ভুয়া শংসাপত্রের প্রবণতা?

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা মানছেন, ভূমি দফতরের মতো ঘুঘুর বাসা এই দফতরে নেই। অনলাইনে কাজ শুরু হওয়ায় স্বচ্ছতা আগের থেকে বেড়েছে। তবে কাজের চাপ বেশি। ফলে তাড়াহুড়োয় তথ্য যাচাইয়ের কাজে ভুল ভ্রান্তি থাকায় ভুয়ো শংসাপত্রর সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিটি ব্লক ও পুরসভায় অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ বিভাগ আছে। সেখানে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের ইন্সপেক্টররা জাতিগত শংসাপত্রের জন্য আবেদন যাচাই করেন। ২০০৮-০৯ সাল থেকে অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর পদ তৈরি করে নিয়োগ হয়। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের থেকেই ওই নিয়োগ হয়। তাঁরাও আবেদনপত্র খতিয়ে দেখার কাজ করেন। তবে অনেক জায়গাতেই সেই পদ ফাঁকা পড়ে থাকে। মূলত, যাচাইয়ের কাজে গাফিলতি হলে ভুয়ো কার্ড ইস্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে অভিযোগ, আবেদনকারীদের সঙ্গে বোঝাপড়া করে অনেক অসাধু কর্মী আবার ভুয়ো কার্ড তৈরিতে সহযোগিতাও করেন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে এমন নজির কিন্তু রয়েছে।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

দুয়ারে সরকার এবং জাতিগত শংসাপত্র

ডিসেম্বর মাসে শুরু হওয়া দুয়ারে সরকার শিবিরে এই বিষয়টি নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। জেলায় জেলায় মিটিং-এ স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়। মূলত, কাস্ট সার্টিফিকেট ডিস্ট্রিবিউশনের উপর খুব জোড় দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য থেকে বিশেষ করে ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট গুলো বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহাকুমা শাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, খুব ভালো করে যাচাই করে যেন কাস্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বিশেষ জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

Caste Certificate Check : জাল ‘জাতিগত শংসাপত্র’-র ছড়াছড়ি! আসল-নকল যাচাই করবেন কী ভাবে? জানুন

আর কী ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য?

গত ২১ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দফতর একসঙ্গে ২৫জন অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী ৯ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলাশাসক অফিসে ইন্টারভিউ হবে। অভিজ্ঞতা থাকায় অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের অবসরপ্রাপ্তরা নিয়োগে অগ্রাধিকার পাবেন। ত্রুটিমুক্ত কার্ড ইস্যু করার লক্ষ্যে একসঙ্গে ২৫জন অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর পদে লোক নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলেই খবর। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে এই নিয়োগ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও এই মুহূর্তে অন্য জেলায় এই নিয়োগের খবর মেলেনি। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সব জেলাতেই এই নিয়োগের সম্ভবনা রয়েছে।

অভিযোগ থাকলে কোথায় জানাবেন?

এ ধরনের ক্ষেত্রে যেকোনও অভিযোগ থাকলে সরাসরি দফতরে অভিযোগ জানানো যাবে। পাশাপাশি ফোন করা যেতে পারে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে। এই নম্বরে ফোন করে বহু সমস্যা মিটে যাচ্ছে। হেল্পলাইন নম্বরটি হল- ৯১৩৭০৯১৩৭০। সকাল ১০ টা থেকে সন্ধে ৬ টা অবধি চালু থাকছে পরিষেবা। দফতরের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও এখানে জানানো যাবে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *