রবিবার রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি মালদাতেও আয়োজিত হয় প্রাথমিকের টেট পরীক্ষা। সেই মোতাবেক মালদার মঙ্গলবাড়ি গৌড় মহাবিদ্যালয়ে পড়ে পরীক্ষার কেন্দ্র। অভিযোগ, সেই পরীক্ষা কেন্দ্রে এক মহিলা অন্য এক মহিলার অ্যাডমিট কার্ড এবং পরিচয় পত্র নিয়ে বায়োমেট্রিক দিয়ে ঢোকেন। প্রশ্নপত্রও পেয়ে যান তিনি। কিন্তু পরীক্ষা পরিদর্শকের সন্দেহ হওয়ায় তিনি জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। পরীক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাদ শুরু করলে কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পাওয়া যায়। এরপরেই ওই ভুয়ো পরীক্ষার্থীর আসল পরিচয় বেরিয়ে আসে। জানা যায় তাঁর নাম পুষ্পাঞ্জলি কুমারী, বাড়ি বিহারের পূর্ণিয়া জেলায়।
পুলিশের দাবি পুষ্পাঞ্জলি কুমারী জেরায় স্বীকার করেছেন যে, পুকুরিয়া থানার হরিপুর গ্রামের এক যুবতীর বদলে পরীক্ষায় এসেছিলেন তিনি। কিছু টাকার বিনিময়ে তিনি রাজি হয়েছিলেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গৌর মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মালদা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ঘটনার নেপথ্যে মূল পাণ্ডাদেরকে ধরার জন্য প্রথমে বিষয়টি গোপন রাখা হয়। পরবর্তীতে ধৃত ভুয়ো পরীক্ষার্থীর মোবাইল থেকে ফোন করা হয় আরও দুই সাগরেদকে জানানো হয় পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে।
এরপর ঘটনার নেপথ্যে থাকা আরও ২ জন রবিবার রাতে মঙ্গলবাড়ি রেল গেটের পৌঁছলে মালদা থানার পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। ধৃত বিশ্বজিৎ মণ্ডলের বাড়ি পুকুরিয়া থানার হরিপুর গ্রামে এবং অপরজন বিজয় কুমারের বাড়ি বিহারের পূর্ণিয়া জেলায়। জানা গিয়েছে, ধৃত বিশ্বজিৎ মণ্ডলের স্ত্রীর হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার জন্যই পুষ্পাঞ্জলি কুমারীকে বিহার থেকে মালদায় নিয়ে আসা হয়েছিল, যদিও শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সোমবার ধৃত তিনজনকেই মালদা জেলা আদালতে তোলা হয়। পুলিশ সূত্রে কর, আরও কিছু ভুয়ো পরীক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্তে শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে বিগত বেশকিছু সময় ধরে তোলপাড় রয়েছে গোটা রাজ্য। সফল পরীক্ষার্থীরা দ্রুত নিয়োগের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন। তারই মাঝে আয়োজিত হয় টেট। আর সেই পরীক্ষায় ফের ভুয়ো পরীক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনায় খুব স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিভিন্নমহলে।