পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু এই ডিসেম্বরেই কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ১১টি সোনার দোকানে ডাকাতির চেষ্টা করেছে ওই দলটি। তার মধ্যে ৪টি দোকান থেকে সোনার গয়না লুট করতে সমর্থ হয় দুষ্কৃতীরা। একের পর এক অপারেশনে ঘুম ছোটে পুলিশের।
বিভিন্ন জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষার পরে এই ডাকাতির ঘটনাগুলি একটিই দলের কাজ বলে নিশ্চিত হন পুলিশকর্তারা। ছবি দেখে অন্যরাজ্যের মনে হলেও কেন দুই জেলাকে বেছে হচ্ছে, তা পরিষ্কার ছিল না তদন্তকারীদের কাছে। শনিবার গভীর রাতে আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন রেলওয়ে জংশন বাজারে দু’টি সোনার দোকানের শাটার ভেঙে কয়েক লক্ষ টাকার গয়না লুটের পরে তিন নম্বর টার্গেটে ব্যর্থ হয় দলটি।
শাটার ভাঙলেও স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ চলে আসায় চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তবে সোর্স নেটওয়ার্কের ভিত্তিতে রবিবার দিনভর তল্লাশি চালিয়ে কোচবিহারের ফালাকাটা থানার একটি জায়গা থেকে ওই দুষ্কৃতী দলের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে পুলিশের এনকাউন্টারের ভয়ে আপাত শান্ত রাজ্যগুলিকে সফট টার্গেট করেছে এই দুষ্কৃতীদলটি। পুলিশ কর্তারা নিশ্চিত, ওই দলটি পালা করে প্রায় প্রতি রাতে সোনার দোকানগুলিতে লুট করার চেষ্টা করছিল। আলিপুরদুয়ারের পলাশবাড়ি, কামাখ্যাগুড়ি ও ফালাকাটায় সোনার দোকান লুটে ব্যর্থ হলেও ৪টি দোকানে ডাকাতি করতে সফল হয় তারা।
পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ থেকে ওই ডাকাতদলটি রাজ্যের দুই প্রান্তিক জেলা আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারকে টার্গেট করার পিছনেও অঙ্ক রয়েছে। আলিপুরদুয়ারে লুট করে খুব সহজেই ভুটান অথবা অসমে গা-ঢাকা দেওয়া সম্ভব। ঠিক একই ভাবে কোচবিহারে হামলা চালিয়ে তাদের পক্ষে বাংলাদেশ বা অসমে পালিয়ে যাওয়াটা সহজ ছিল।
পুলিশের বেগ পাওয়ার কারণ কী? জেলার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ থেকে এ রাজ্যে আসা ওই ডাকাতদলটি দিনে কম্বল বিক্রেতার ছদ্মবেশে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের বিভিন্ন জনপদে ঘুরে রেকি চালাত। রাত নামলেই টার্গেট করা হতো সোনার দোকান। শাটার ভেঙে লুটের চেষ্টা চলত।’
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী বলেন, ‘দলটির সদস্যরা অত্যন্ত ধূর্ত। কোচবিহারেই গোপন ডেরা তৈরি করে থাকছিল। তদন্তে প্রাথমিক সাফল্য মিলেছে। আশা করছি, দ্রুত গোটা দলটিকে পাকড়াও করতে পারব।’