সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিনয় তামাং এর সঙ্গে বৈঠক করার পরে একে একে জিএনএলএফ নেতা মহেন্দ্র ছেত্রী, হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ডস, ভারতীয় গোর্খা পরিসঙ্ঘের সভাপতি মুনিশ তামাংয়ের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন রাহুল। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে পাহাড়ের নেতারা যে আর পদ্মকে ভরসা করবেন না, তাঁদের কথাতেই পরিষ্কার।
তাঁরা যে মনপ্রাণ দিয়ে বিজেপির ছায়া থেকে বার হতে চাইছেন রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ছবি তোলার উৎসাহে টের পাওয়া গিয়েছে। বাবার মৃত্যু খবর পেয়েও এ দিন রাহুলের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করেননি হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডস। তিনি বলেন, ‘আজ সকালে দিল্লিতে বসেই বাবার মৃত্যুর খবর পেলাম। আমার ফিরে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক বাতিল করতে চাইনি। তাই বৈঠক করেই পাহাড়ের পথে রওনা হই।’
২০০৯ সাল থেকে লোকসভা নির্বাচনে পাহাড় বিজেপির পাশে রয়েছে। টানা তিন জন সাংসদ দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন। এ বার যে পাহাড় আর সে পথ মাড়াবে না, বিমল গুরুং-সহ পাহাড়ের নেতারা নানা ভাবে ইঙ্গিতও দিয়েছেন। তবে লোকসভা নির্বাচনের মুখে পাহাড়ের নেতাদের সঙ্গে রাহুল গান্ধীর বৈঠকের উদ্দেশ্য খোলসা করেননি কংগ্রেস নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক বিনয় তামাং বলেন, ‘এদিনের বৈঠকে পাহাড়ের সমস্যাগুলি নিয়ে গভীর ভাবে আলোচনা হয়েছে।’
পাহাড়ের রাজনীতিতে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, হামরো পার্টি, সিপিআরএম বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করলেও এখনও সঙ্গে রয়েছে জিএনএলএফ। সেই জিএনএলএফের এক নেতাও বলেছেন, ‘পনেরো বছর তো বিজেপিকে দেখলাম। আর কী দেখব। এ বার নতুন করে সব কিছু ভাবতেই হবে।’ জিএনএলএফের হয়ে বৈঠকে ছিলেন মহেন্দ্র ছেত্রী।
তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার পাহাড়ে ষষ্ঠ তফসিলে স্বায়ত্বশাসনের জন্য সুবাস ঘিসিংয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। আজকের বৈঠকে রাহুল গান্ধীকে সে কথাই জানিয়ে দলের মনোভাব স্পষ্ট করে দিই। রাহুল গান্ধী বিষয়টি সংসদে তুলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
এদিন রাতে জিএনএলএফের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে ঘোষণা করা হয়, ‘মহেন্দ্র ছেত্রীর সঙ্গে প্রায় এক বছর ধরে জিএনএলএফ-এর কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক এবং বৈঠকে তিনি যা বলেছেন, একান্তই ব্যক্তিগত।’