West Bengal BJP : সিটিং এমপি মানেই টিকিট পাকা নয়, বঙ্গ বিজেপিকে বার্তা শাহের – sitting mp does not mean ticket is ripe amit shah message to west bengal bjp


এই সময়: ঝটিতি সফরে বাংলায় এসে রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের চিন্তা বাড়িয়ে দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। তাঁদের স্পষ্ট বার্তা, সিটিং এমপি মানেই যে ফের ২০২৪-এ টিকিট মিলবে, তার কোনও মানে নেই। ফলে সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। এরকম কিছু যে ঘটতে চলেছে, তার ইঙ্গিত বিভিন্ন সূত্র মারফত আগেই পেয়েছিলেন বাংলার গেরুয়া সাংসদরা।

মঙ্গলবার শাহ-নাড্ডার সঙ্গে দু’দফায় রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠকের পরে এ বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ে হলো, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউটাউনের হোটেলে হাতে গোনা কয়েকজন সাংসদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকও করেন শাহ। সূত্রের খবর, সেই তালিকায় ছিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, রানাঘাটের জগন্নাথ সরকার, আলিপুরদুয়ারের জন বারলা, কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক, বাঁকুড়ার সুভাষ সরকারের মতো আরও কয়েকজন।

এই বৈঠকে বেশ কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্রের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা সভাপতিদেরও ডাকা হয়েছিল। তাঁদের মতামতও নেন শাহ-নাড্ডারা। শোনেন ওই সব লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদদের বক্তব্যও। এই মিটিংয়ের পরে সংশ্লিষ্ট সিটিং এমপি-দের শাহ-নাড্ডারা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেন, দলের জয়টাই বড় কথা। তার জন্য যা যা করার করা হবে। এখানে প্রার্থী কে হলেন বা কে হলেন না, সেটা কোনও ব্যাপার নয়। এরপরে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারদের মতো রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে শাহরা বার্তা দেন, যদি কোনও সিটিং এমপি টিকিট না-ও পান, তাহলেও তাঁর হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

তাঁকেও দলের জয়ের কাজেই ব্যবহার করা হবে। এই বার্তাটা যাতে বঙ্গ-বিজেপির নেতারা সবাইকে ভালো করে বুঝিয়ে দেন, সেটাও বলেন শাহরা। কেন হাতে গোনা কয়েকজন সাংসদের সঙ্গেই শাহ-নাড্ডারা আলাদাভাবে মিটিৼ৾ং করলেন, তা নিয়ে খানিকটা ধন্দে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব। দলের অনেকেই মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আসন সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দিষ্ট বার্তা দিতেই ডাকা হয়েছিল তাঁদের।

সূত্রের খবর, সিটিং এমপিদের কয়েকজন ২০২৪-এর ভোটে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও তাঁরা নিজেদের বর্তমান আসন বদল করতে চান-গত বেশ কিছুদিন ধরে এমন একটা বার্তা তাঁদের তরফে দিল্লিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল। এদিনের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়।

বঙ্গ-বিজেপির এক শীর্ষ নেতা এদিন রাতে বলেন, ‘দীর্ঘ আলোচনার পরে রাজ্যের অন্তত পাঁচ-ছ’টি আসনের সিটিৼ৾ং এমপি বদল হচ্ছেন বলেই আমাদের কাছে ইঙ্গিত রয়েছে।’ সূত্রের দাবি, ওই সব আসনে বিকল্প প্রার্থী কারা হতে পারেন, তারও একদফা ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছেন শাহ-নাড্ডারা। বর্তমান বিধায়কদের মধ্যে যাঁদের পারফরম্যান্স ভালো, তাঁদের মধ্যে থেকেই এই সব আসনে বিকল্প প্রার্থী বেছে নেওয়ার সুযোগ আছে বলে বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

ইতিমধ্যে বাংলা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বর্তমান সাংসদদের পারফরম্যান্স একটি বেসরকারি পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে যাচাই করিয়েছেন বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। সেখানে দেখা গিয়েছে, বাংলাতেও এমন কয়েকজন সাংসদ রয়েছেন, যাঁদের ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে এলাকার লোকজন সেভাবে দেখেনইনি। এমনকী পার্টির স্থানীয় নেতারাও তাঁদের দেখা পান না। সেই সব প্রার্থীকে যে কোনওভাবেই টিকিট দেওয়া হবে না, সেটা একরকম পরিষ্কার শুভেন্দু-সুকান্তদের কাছে।

ভোটের রণকৌশল নিয়েও এদিনের ম্যারাথন মিটিংয়ে একপ্রস্ত আলোচনা হয়েছে। এদিন জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রেক্ষাগৃহে সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে অমিত শাহকে শুনতে হয়, রাজ্যে একাধিক দুর্নীতি মামলায় কয়েকজন হেভিওয়েটের নাম সামনে এলেও তাঁদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না। যার জন্য বঙ্গ-বিজেপির নেতৃত্বকেও নিজ নিজ এলাকায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।

সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক নিয়োগ দুর্নীতি বা রেশন কেলেঙ্কারি মামলায় রাজ্যের শাসক দলের যে নেতা-মন্ত্রী-বিধায়করা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁদের ফর্দ শোনান শাহ নিজেই। বিজেপির হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁরা ক্যাম্পেন চালাচ্ছেন, তাঁদের তরফ থেকে শাহকে পালটা বলা হয়-যাঁরা গ্রেফতার হবেন, তাঁদের নামও বলুন। অমিত শাহ এতে কোনও সরাসরি জবাব না-দিয়ে মুচকি হাসেন। এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝোড়ো প্রচার শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন জেপি নাড্ডা।

Bharatiya Janata Party : টার্গেট পূরণে প্রাথমিক প্রার্থী বাছাই শাহ-নাড্ডার বৈঠকে?
সূত্রের খবর, তিনি এই বৈঠকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুধু বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয় নেতাই নন, তিনি ইউটিউব চ্যানেলেও সমান জনপ্রিয়। তাঁর ফলোয়ার সৼ৾ংখ্যা দু’কোটি ছাড়িয়েছে।’ কেন্দ্রীয় সরকার গত দশ বছরে কী কী ভালো কাজ করেছে, দেশের অর্থনীতি কীভাবে শক্তিশালী হয়েছে, সে সব সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আসন্ন লোকসভা ভোটে বিশেষ করে মতুয়া অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-ও একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন গেরুয়া নেতারা।

তবে কবে সিএএ লাগু হবে, এ নিয়ে এখনও ধন্দ রয়েছে সাধারণ নাগরিক থেকে বিজেপির নেতা-কর্মীদের। সূত্রের দাবি, নির্দিষ্ট দিনক্ষণ না-জানালেও শাহ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সিএএ লাগু হবেই।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *