Calcutta High Court : ‘কে বলেছে গৃহবধূরা বেকার? সংসারে অনেক বড় অবদান,’ পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের – calcutta high court observation about housewife is that they are not jobless


গৃহবধূদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের। এক মামলার শুনানিতে আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ‘গৃহবধূদের বেকার বলা যাবে না, তাঁদেরকেও উপার্জনকারী হিসাবেই দেখতে হবে।’ যাঁরা পরিবারে অভ্যন্তরীণ চালিকা শক্তি বা বলা ভাল মেরুদণ্ড, তাঁদের উদ্দেশে উচ্চআদালতের এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিভিন্নমহল।

যে মামলার প্রেক্ষিতে আদালত এদিন এই মন্তব্য করেছে, তার সূত্রপাত ২০০৮ সালে। জানা গিয়েছে, ওই বছর পথ দুর্ঘটনায় বর্ধমানের ক্ষীরগ্রামে মৃত্যু হয় এক মহিলার। বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস ধরতে যাচ্ছিলেন তিনি। বাসস্ট্যান্ডের সামনেই তাঁকে পিষে দিয়ে চলে যায় একটি বাস। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বর্ধমানের মোটর অ্যাকসিডেন্ট ক্লেম ট্রাইব্যুনালে মামলা করে মৃতার পরিবার। ক্ষতিপূরণ হিসাবে দাবি করা হয় ৬ লাখ টাকা। কিন্তু যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা, সেই সংস্থা অবশ্য মৃতার পরিবারের এই দাবি মানতে রাজি হয়নি। মৃতার পরিবারকে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেয় সংস্থাটি।

এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় গৃহবধূর পরিবার। তাঁদের হয়ে আদালতে মামলা লড়েন আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তিনি ২০০৮ সাল থেকে মৃতা গৃহবধূর সম্ভাব্য উপার্জনের হিসাব দিয়ে আদালতে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পালটা সংস্থার তরফে প্রশ্ন তোলা হয়, মৃতা কোনও উপার্জন করতেন না। তিনি গৃহবধূ ছিলেন, তাহলে তাঁর সম্ভাব্য উপার্জন হিসাবে এত টাকা চাওয়া হয় কী করে?

এর প্রেক্ষিতেই গৃহবধূদের উপার্জন প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘কে বলেছে, গৃহবধূরা বেকার? সংসারে গৃহবধূদের অবদান অনেক বড়। তাঁরা কোনও ছুটি না নিয়ে ৩৬৫ দিন সংসারের যাবতীয় কাজ করেন। একই কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করালে যে খরচ হত, তা ব্যয় করতে হয় না ওঁদের দৌলতেই। তাই সংসারে ওঁদের কাজের আর্থিক মূল্যও রয়েছে। আর সেই জন্যই গৃহবধূদের বেকার বলা যাবে না, উপার্জনকারী হিসেবেই দেখতে হবে।’

‘কে বলেছে, গৃহবধূরা বেকার? সংসারে গৃহবধূদের অবদান অনেক বড়। তাঁরা কোনও ছুটি না নিয়ে ৩৬৫ দিন সংসারের যাবতীয় কাজ করেন। একই কাজ অন্য কাউকে দিয়ে করালে যে খরচ হত, তা ব্যয় করতে হয় না ওঁদের দৌলতেই। তাই সংসারে ওঁদের কাজের আর্থিক মূল্যও রয়েছে। আর সেই জন্যই গৃহবধূদের বেকার বলা যাবে না, উপার্জনকারী হিসাবেই দেখতে হবে।’

কলকাতা হাইকোর্ট

এরপরই আদালত গৃহবধূর পরিবারকে ৬ লাখ ৪১ হাজার ২০০ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেয়। ওই গৃহবধূর প্রতি মাসের সম্ভাব্য বেতন ৩০০০ টাকা হিসাবে ধরে তার উপর সুদের হার ধার্য করেই এই টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানায় আদালত। কিন্তু যেহেতু সংস্থাটি ইতিমধ্যেই ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছে, তাই বাকি আর ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭০০ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে সংস্থাটিকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *