Kunal Ghosh : কেন হার নন্দীগ্রামে? কুণালের নিশানায় নেতৃত্বেরই একাংশ – kunal ghosh says trinamool leaders responsible for defeat in nandigram


এই সময়: ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে কারচুপির কারণেই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত হয়েছেন বলে তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জোড়াফুলের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও নন্দীগ্রাম বিধানসভার ফলাফল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে। এরমধ্যে নন্দীগ্রামে মমতার ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সোমবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কেন তৃণমূলের কয়েক জন নেতা-মন্ত্রী শুভেন্দুকে চড়া সুরে আক্রমণ করছেন না—সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

তৃণমূল ভবনে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এদিন জোড়াফুলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই করার সম্ভাবনা নিয়ে আচমকা মন্তব্য করেন। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছেন কুণাল। এই প্রসঙ্গেই তিনি নন্দীগ্রামে মমতার পরাজয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

কুণালের কথায়, ‘শুভেন্দু কারচুপি করেছে—এটা একশো শতাংশ ঠিক। কিন্তু দলের যাঁরা দায়িত্ব ছিলেন, তাঁরা সেই কারচুপি ধরতে পারেননি কেন? হতে দিলেন কেন? তৃণমূল রেকর্ড সংখ্যায় আসনে জিতল, কিন্তু নন্দীগ্রামে মমতার পক্ষে তো বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার সম্ভব নয়। তখন আমরা কেউ ছিলাম না। কারা দায়িত্বে ছিলেন? তার কী রিভিউ হয়েছে?’

তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘মমতার মতো মুখ প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও শুভেন্দুর কারচুপি কাজ করবে কেন? নন্দীগ্রামে দলকে যারা পিছিয়ে দিয়েছে, তারা আজ অভিষেককে পিছিয়ে যাওয়ার কথা বলছে!’ কুণালের কোনও মন্তব্য নিয়েই শুভেন্দু প্রতিক্রিয়া দেন না।

তবে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘এতদিন তো শুনতাম লোডশেডিং করে শুভেন্দু জয় পেয়েছেন। অবশেষে তা হলে পরাজয় স্বীকার করে নিলেন। নন্দীগ্রামের মানুষ শুভেন্দুকে নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু যে দলের রাজ্য সভাপতিকে সেই দিলের মুখপাত্র এমন কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেন এবং তারপরও দু’জনে স্বপদে থাকেন—সেই দল কেমন, তা মানুষ দেখতে পাচ্ছেন।’

নন্দীগ্রামে মমতার নির্বাচনী প্রচার, গণনা-সহ বিভিন্ন কাজে সুব্রত বক্সী, পূর্ণেন্দু বসু, দোলা সেন, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়-সহ একঝাঁক নেতাকে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলকে সাহায্য করতে একটি ভোটকুশলী সংস্থাও সক্রিয় ছিল। যদি কুণালের প্রশ্ন, ‘নন্দীগ্রামে নির্বাচনের দায়িত্বে কারা ছিলেন? কেন মামলার উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে? যাঁরা মমতার মতো মুখকে বিক্রি করতে পারেন না, জনতার দরবারে মার্গো সাবান বিক্রি করতে গিয়েছেন!

নন্দীগ্রামে ঘরে ঘরে মমতার মুখ রয়েছে। সে-ই নির্বাচনে (জিততে) পারেননি। তাঁদের হাতে রাজ্যে দল নিরাপদ? হয় নাকি কখনও?’ কুণালের এই মন্তব্য নিয়ে বক্সীরা এদিন কোনও পাল্টা বক্তব্য দেননি। তবে শমীকের খোঁচা, ‘সাবান, ধূপকাঠি, মাজনের সঙ্গে মমতার তুলনা করা এবং আলোচনা একমাত্র তৃণমূলের নেতারাই করতে পারেন! এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি।’

Kunal Ghosh : ‘অন্ধভক্তি দেখাতে গিয়ে বিভাজন…’, কুণালের মন্তব্যে তোলপাড়
শুভেন্দুকে তিনি যে ভাষায় সমালোচনা করেন, কেন তৃণমূলের একদল নেতা সেই ভাষায় আক্রমণ করছেন না—তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। তৃণমূলের মুখপাত্র এ দিন বলেন, ‘কয়েক জন সিনিয়র নেতাকে একটা স্ট্যান্ড নিতে হবে। শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির কয়েক জন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রোজ চূড়ান্ত কুকথা বলে চলেছেন। কিন্তু কয়েক জন পদাধিকারী, সিনিয়র নেতা, মন্ত্রীকে দেখি সব বিষয়ে প্রথম সারিতে থাকেন। কিন্তু চোর-শুভেন্দু এরা কেউ বলে উঠতে পারলেন না। কয়েকজন মন্ত্রী একাধিক পদ নিয়ে বসে রয়েছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দেখা যায়। কিন্তু শুভেন্দুকে গালি দেওয়ার বেলায় শুধু আমরা দু’-চার জন! তাঁরা কেন গাল দেবেন না।’

জোড়াফুলের এই নেতার উদ্দেশে কুণালের সংযোজন, ‘দল থেকে সব পেয়েছেন! কেন এঁরা সমালোচনা করেন না? শুধু গোলগোল, ন্যাকান্যাকা বক্তৃতা করেন? সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে যাঁরা জ্ঞান দেন, তাঁরা কেন শুভেন্দুকে কিছু বলেন না?’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *