Silicone Statue : ১০ বছর ধরে নিখোঁজ ছেলে, সিলিকনের মূর্তি হাসি ফোটাল পুত্রহারা মায়ের মুখে – mother made silicone statue of her missing son by subimal das sculptor


বাড়ির পাশে দুধ আনতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি ২৮ বছর বয়সী অভিষেক ভট্টাচার্য। ১০ বছর ধরেই অভিষেক নিখোঁজ। স্থানীয় পুলিশ স্টেশন থেকে লালবাজার এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করা থেকে নবান্নে আবেদন, কিন্তু কেউই ছেলেকে মা এর কাছে ফিরিয়ে দিতে পারেনি। অবশেষে সিলিকনের জাদুকর সুবিমল দাস-এর কাছ থেকে ‘ছেলেকে’ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন সন্তানহারা মা।

এই ঘটনা কোনও গ্রাম বাংলার বা প্রত্যন্ত গ্রামের ঘটনা নয়। এই ঘটনা একেবারে কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকার। তারিখটা ২০১৪ ৮ অগাস্ট। টালিগঞ্জ করুণাময়ী এলাকার বাসিন্দা ভট্টাচার্য পরিবার মা ও ছেলে। অভিষেকের ৭ বছর বয়সেই বাবাকে হারায়। তারপর মা গীতা ভট্টাচার্য তাঁর স্বামী চাকরি পান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। ছেলেকে পড়াশোনা করানো বড় করা সব একা মা। এরপর ছেলে তখন অনেকটাই বড় হয়ে গেছে,বয়স ২৮।

মায়ের কথা মত বাড়ি থেকে বেড়িয়ে দুধ আনতে গিয়েছিল অভিষেক ভট্টাচার্য। অনেকটা সময় কেটে গেলেও অভিষেক বাড়ি আসে না। পরিবার থেকে খোঁজ পরে অভিষেক এর। আশপাশের সকলকে জানানো হয়,কিন্তু অভিষেক এর আর খোঁজ মেলে না। দুধের দোকানে গিয়ে খোঁজ নিলে জানতে পারে অভিষেক সেই দোকানেই যায়নি। অবশেষে স্থানীয় রিজেন্ট পার্ক থানায় অভিযোগ জানানো হয়। থানার তরফ থেকে শুরু করে খোঁজ, বিভিন্ন থানায় খোঁজ নেওয়া হলেও মেলেনা কোনও খোঁজ। সেই দিন বিকালে রিজেন্ট পার্ক থানা থেকে এসে জানানো হয় ১২ কপি ছবি নিয়ে লালবাজারে গিয়ে অভিযোগ জানাতে। সেইদিন রাত হয়ে যাওয়ায় পরের দিন লালবাজার থেকে ছেলের খোঁজ শুরু করে মা গীতা ভট্টাচার্য।

গিতা দেবী জানান, অভিষেক ভট্টাচার্য খুঁজে আর পাওয়া গেলো না ১০ বছরেও। পেপারে বিজ্ঞাপন থেকে আইজি, ডিআইজি, ভবানীভবন, রাজ্যের মন্ত্রী আমলা, এমনকি রাষ্ট্রপতি দরবারেও তিনি ছেলের খোঁজ করে বের করার আবেদন জানান। কিন্তু কেউ তার ছেলেকে খুঁজে দিতে পারেনি। আজ তিনি অনেকটাই হাফিয়ে গেছেন,যে লড়াই শুরু করেছিল আজ থেকে ৩৭ বছর আগে যখন স্বামীকে হারিয়েছিলেন। আজ কেমন সন থমকে গেছে।লালবাজার থেকে জানিয়ে দিয়েছে আর সম্ভব নয়।

নিয়ম অনুযায়ী ৭ বছর কেটে যাওয়ার পর এমন নিখোঁজ অভিযোগকে ক্লোজ করতে হয়। তবে ছেলের মৃত্যু হয়েছে এমন কোন রিপোর্ট দেয়নি লালাবাজার। কী ভাবে ছেলেকে ফিরিয়ে আনা যায় এই চিন্তায় ইন্টারনেট, বিভিন্ন খবর সার্চ করতে করতে খুঁজে পায় সুবি ইন্ডিয়ার কর্ণধার সুবিমল দাস এর খোঁজ। তারপর যোগাযোগ হয় সুবি ইন্ডিয়ার এক কর্মী সোমালিয়া দত্তের সঙ্গে। সোমালিয়াই গীতা দেবীকে গাইড করে নিয়ে আসে উত্তর দমদমের বিরাটি স্টেশন সংলগ্ন তাদের প্রতিষ্ঠানে। গীতা দেবী ৪-৫ টি ছবি নিয়ে আসেন ছেলে অভিষেকের পরিচয় হয় সিলিকনের জাদুকর সুবিমল দাস এর সাথে। তারপর সেই ছবি দেখে শুরু হয় ছেলে কে তৈরি কাজ।

Banipur Mela : রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম লোক সংস্কৃতি উৎসব! বানীপুর মেলায় কী দেখবেন-কী ভাবে যাবেন?
আজ যখন ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে এসেছে মা,তখন অনেক কষ্টের মধ্যেও মা গীতা দেবী কিছুটা খুশি। কারণ ছেলেকে জীবন্ত বাড়ি ফিরিয়ে না নিয়ে যেতে পারলেও ছেলের মতো দেখতে নিয়ে যেতে পারছে। এবার থেকে সব সময় ছেলেকে কাছে পাবেন তিনি। এই নিয়ে আগামী দিনগুলি কাটাবেন গীতা ভট্টাচার্য। এই আশায় অনেকটা অর্থ ব্যয় করে (প্রায় ৩ লাখ টাকা) বছরের শুরুতেই ১০ বছরের হারিয়ে যাওয়া অভিষেক ভট্টাচার্যকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন সুবিমল দাসের কাছ থেকে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *