যে কোনও সময়ে ঘটে যেতে পারে বড় সড় দুর্ঘটনা। অনেকে ভয়ে ছেলে-মেয়েদের স্কুলেও পাঠাচ্ছেন না। পূর্বস্থলী উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক উজ্জ্বল রায় বলেন, ‘দুই-তিনবার ওই স্কুল পরিদর্শন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, তাড়াতাড়ি ফান্ড পাব।’
প্রি প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণির এই বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা দুশোরও বেশি। অভিভাবকদের আশঙ্কা, স্কুল ভবন যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। চম্পা বিবি মল্লিক নামে এক জন বলেন, ‘নাতি সোহেল শেখ স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বছর তিনেক ধরে স্কুল বেহাল। যতক্ষণ স্কুলে থাকে আতঙ্কে থাকি। স্কুলের মিটিংয়ে বহুবার সরব হয়েছি। যদি কিছু হয় কে দায়িত্ব নেবে? সবাই প্রথম প্রথম সান্ত্বনা দেবে। কিন্তু, গেলে তো আমারই যাবে।’
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র রাজীব শেখের বক্তব্য, ‘শুধু ভবনই নয়, শৌচালয়ের অবস্থাও বেহাল। বর্ষায় কাদা হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের ঘুরে আসতে হয়। স্কুলে মিড-ডে মিলও খেতে হয় খোলা আকাশের নীচে মাঠের মধ্যে। ছাগল, কুকুর, হাঁস, মুরগির সঙ্গেই খেতে হয় মিড-ডে মিল।’ মহিদুল শেখ নামের এক অভিভাবক বলেন, ‘ভয়ে স্কুলে পাঠাতে পারছি না ছেলেকে। যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে দেওয়াল। বর্ধমান স্টেশনে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার পর আতঙ্ক আরও বেড়েছে।’
আতঙ্কিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণগোপাল মণ্ডলও। বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীর তুলনায় ঘর কম। চারটে মাত্র ঘর। একটি ঘরে দুটো ক্লাসও করাতে হয় বাধ্য হয়ে। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ওঁরা আশ্বাস দিয়েছেন।’
খোলা মাঠে কুকুর, ছাগলের সঙ্গে মিড-ডে মিল খাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, ‘উম্পুন ঝড়ে মিড-ডে মিলের ঘরের চাল উড়ে যায়। স্কুলের বাউন্ডারিও অসম্পূর্ণ। তাই বাধ্য হয়ে খোলা মাঠে মিড-ডে মিল খাওয়াতে হয়।’ এ প্রসঙ্গে পূর্বস্থলী উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে দেখব। তার পর ব্যবস্থা নেব।’