লোকসভা নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনী আবহে রাজ্যে ভিআইপি রাজনীতিবিদের আনাগোনাও বাড়ছে। ভোট এলেই বাংলার জেলায় জেলায় মুড়িমুড়কির মতো শুরু হয় বোমাবাজি। এই পরিস্থিতিতে ভিআইপি এবং সাধারণের নিরাপত্তায় ‘গন্ধশোঁকা’ অত্যাধুনিক যন্ত্র কিনতে চলেছে সিআইডি’র বম্ব স্কোয়াড। পুলিশের স্নিফার ডগের মতোই তার কার্যকারিতা।
কোথাও বোমাতঙ্ক হলে নিয়ে যাওয়া হবে ওই যন্ত্র। সন্দেহজনক বস্তুর কাছে এলেই ‘এক্সপ্লোসিভ ভেপার ডিটেকশন মেশিন’-এর ডিসপ্লে বোর্ডে ফুটে উঠবে, কী ধরনের বিস্ফোরক রয়েছে। এক বার বিস্ফোরক শনাক্ত হয়ে গেলে সেই মতো পদক্ষেপ করতে পারবে বম্ব স্কোয়াড। সিআইডি সূত্রে খবর, এই যন্ত্র কিনতে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে নবান্নে। এখন অনুমোদনের অপেক্ষা।
যেহেতু যন্ত্রগুলির দাম অনেক, তাই শেষ পর্যন্ত এমন কতগুলি যন্ত্র ভবানী ভবনে আসবে–তা এখনও স্পষ্ট নয়। নাইট্রোগ্লিসারিন, পিইটিএন, টিএনটি, আরডিএক্সও যদি থাকে, তা ডিটেক্ট করে রাসায়নিকের নাম দেখিয়ে দেবে ওই যন্ত্র। ‘মিনি রোবট ওপারেটেড ভেহিকেল’ বা এমআরওভি’ও কিনতে চলেছেন গোয়োন্দারা। বিভিন্ন দেশের এলিট বাহিনীর কাছে রয়েছে ওই ধরনের যন্ত্র।
উন্নতপ্রযুক্তির সিসি ক্যামেরা লাগানো রোবট মেশনগুলিকে প্রায় ৫০০ মিটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সিআইডি’র এক অফিসারের কথায়, ‘সাবধানের মার নেই। বম্ব স্যুট পরে অপারেশন করতে গিয়েও আহত হতে পারেন অফিসারেরা। যন্ত্রগুলি এলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে।’
ভবানী ভবন সূত্রে খবর, শক্তিশালী বিস্ফোরকের ক্ষেত্রে এই দু’টি যন্ত্র অত্যন্ত কার্যকরী। একটির মাধ্যমে আগে থেকেই জানা যায়, কী ধরনের বিস্ফোরক রয়েছে। অন্যটির মাধ্যমে ওই বিস্ফোরক দূর থেকেই নিষ্ক্রিয় করা যায়। যন্ত্রগুলি তৈরি করতে যে কোম্পানিগুলি এক্সপার্ট এবং যে-সব এলিট বাহিনী সে-সব ব্যবহার করছে–তাদের থেকে যাচাই করেই কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
সিআইডি’র এক অফিসারের কথায়, ‘যন্ত্র কিনলেই তো হলো না, এই ধরনের উন্নত যন্ত্র পরিবহণে আধুনিক গাড়িও কেনা হচ্ছে। ভবানী ভবনে এমন দু’টি গাড়ি থাকবে। বাকিগুলি জেলার ইউনিটে পাঠানো হচ্ছে।’ সিআইডি সূত্রে খবর, আগে সুমো জাতীয় গাড়ি ভাড়া করে বম্ব স্যুট বা যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া হতো। সে সবের মধ্যেই বসে থাকতেন অফিসারেরা।
কিন্তু তেমনটা হওয়ার কথাই নয় বলে জানাচ্ছেন বম্ব স্কোয়াডের বিশেষজ্ঞরা। এ বার যে গাড়িগুলি কেনা হচ্ছে, তাতে যন্ত্রগুলি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখার বন্দোবস্ত থাকছে। তাতে অফিসারেরাও নিরাপদে থাকবেন।