বছরের শুরুতেই নবান্ন একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়, এবার থেকে বাংলার মাটি, বাংলার জল ‘রাজ্য সংগীত’ হিসেবে মান্য করা হবে। কবিগুরুর রচিত গানের কিছু শব্দ নিয়ে মাঝে কিছু জটিলতা তৈরি হয়। গানের মাঝে ‘বাংলার পণ, বাংলার আশা’ করা হবে ‘বাঙালির পণ, বাঙালির আশা’ বদলে। পরে তা আর বিবেচিত হয়নি। সেই প্রেক্ষাপট থেকেই ২০ জুন দিনটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করার কথাও বলা হয়।
তবে বিষয়টি ফের চর্চার শীর্ষে উঠে আসে আজকের ব্রিগেডের সভায়। ব্রিগেড মানেই গণসঙ্গীত। তবে এবারের ব্রিগেড সভায় দেখা গেল নতুন চমক। সমাবেশের শুরুতে আপন করে নেওয়া হল কবিগুরুর এই গানকে। সমবেত গানে বাংলার সেই চিরাচরিত সুর।
কেন এই গানকে বেছে নেওয়া হল, DYFI এক নেতা জানান, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদৌ এই গান রাজ্য সংগীত হিসেবে বেছে নিয়েছেন ঠিকই, কিন্ত সেটাকে বিকৃত করা হয়েছিল। আর রবীন্দ্রনাথের গান তো কারও সম্পত্তি নয়। সেখানে গান গাওয়া নিয়ে আপত্তি কোথায়?’ ডিওয়াইএফআইয়ের কলকাতা জেলা সম্পাদক পৌলমী মজুমদার জানিয়েছে, ধর্মীয় বিভেদের সময় এই গান লিখেছেন কবিগুরু। আজকের দিনেও সেই প্রেক্ষাপট তাৎপর্যপূর্ণ।
আইনজীবী তথা সিপিএম সমর্থক সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা রবীন্দ্রনাথের লেখা একটি গান। বাংলার ইতিহাসের নির্দিষ্ট একটি সময় এই গানটি লেখা হয়েছে। এই গানটির একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। সেটাকে রাজ্য সংগীতের মোড়ক দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে, এরকম দুর্দশা বাংলার সংস্কৃতিতে নেই।’
পরিবর্তনশীলতা রাজনীতির অঙ্গ। প্রবীণের পথকে পাথেয় করে নব্য যুগ নতুন ধারা বয়ে নিয়ে আসেন রাজনীতিতে। সেই কারণেই যুব সংগঠনের সমাবেশে এই গানকেই আঁকড়ে ধরা হল বলেই জানাচ্ছেন সমাবেশে আসা অনেক সমর্থক। আবার অনেকেই বলছেন, রবীন্দ্র সংগীত তো প্রত্যেকে বাঙালির মনের মধ্যেই রয়েছেন। সেখানে বাংলার একটি সমাবেশে এই গান গাওয়া হবে এটাই তো স্বাভাবিক, এতে চর্চার কোনও বিষয় নেই।