এই নিয়ে দু’জন গ্রেপ্তার হলেও দীপকের গ্রেপ্তারকেই ব্রেক-থ্রু বলে মনে করছে পুলিশ। মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের আশা, এ বার দলের বাকিরাও ধরা পড়বে এবং ডাকাতির জিনিস উদ্ধার হবে।
২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চাঁচলে কার্নিভাল উপলক্ষে পুলিশ ব্যস্ত ছিল ভিড় সামাল দিতে। সেই সময়ে থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সোনার গয়নার বড় শোরুমে বন্দুক উঁচিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকার সোনার গয়না নিয়ে পালিয়ে যায় ৫ দুষ্কৃতী। ঘটনার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ব্যবসায়ীরা। মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছিলেন, গত ১ বছরে বর্তমান আইসির সময়কালে চাঁচলে তিনটি সোনার দোকানে এবং একটি বিলিতি মদের দোকানে ডাকাতি হয়েছে। এর মধ্যে বড়দিনের ডাকাতি গোটা রাজ্যের নিরিখে সোনার দোকানে সব চেয়ে বড় ঘটনা। গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের পাশাপাশি চাঁচল বিহার ও ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন হওয়ায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়। এর পরেই চাঁচলে সিআইডির বিশেষ দল তদন্তে আসে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও সিট গঠন করা হয়। তদন্তে গতি বাড়ে।
কী ভাবে পুলিশ দীপকের কাছে পৌঁছল? ডাকাতির এক সপ্তাহের মাথায় গত ৩০ ডিসেম্বর রাতে চাঁচলের মল্লিকপাড়া এলাকার নিমগাছি গ্রাম থেকে শাহজাহান নামে মাঝবয়সী একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, শাহজাহান ওই ডাকাতির ঘটনায় লিঙ্কম্যানের কাজ করেছে। তাকে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়ে টানা জিজ্ঞাসাবাদে শাহজাহানের পেট থেকে অনেক তথ্যই বেরিয়ে আসে।
সেই সূত্র ধরেই গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলায় সিটের দল হানা দেয়। স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় জিরওয়াবাড়ি থানার লোহান্ডা গ্রাম থেকে দীপক দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে এসে শনিবার তাঁকে চাঁচল মহকুমা আদালতে হাজির করার পর বিচারক ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ডাকাতির ঘটনায় দীপকের ভূমিকা কতটা? পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, তদন্তে লালু সাহানি নাকেভ নামে এক ব্যক্তর নাম উঠে এসেছে। ধৃত লিঙ্কম্যানকে জেরা করে জানা গিয়েছিল ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা লালু সাহানি এই ডাকাতির মূল হোতা। পুরো অপারেশনের নেতৃত্বেও ছিল সে। ধৃত দীপক, লালুর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এবং ডান হাত। মাত্র ২২ বছর হলে কী হবে, এর মধ্যেই দীপক পেশাদার অপরাধী হিসেবে নামডাক করে ফেলেছে। ঝাড়খণ্ডে খুন সহ বেশ কিছু অপরাধে অভিযুক্ত সে।
মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। ৫ কোটি টাকার বেশি মূল্যের গয়না ডাকাতি হয়েছে। সোনার দোকানে ডাকাতির ক্ষেত্রে রাজ্যের সবচেয়ে বড় ঘটনা এটি। তবে পুলিশের তদন্তে আমরা খুশি।’