বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা দুটি চিঠিতেই প্রধান শিক্ষককে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবমশী বলেন, ‘আমরা তদন্ত শুরু করেছি।’ এমন চিঠি পেয়ে অবাক স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ দত্ত চৌধুরী। তবে তিনি স্বীকার করেন, স্কুলের পরিকাঠামো সত্যিই খুব খারাপ।
তাঁর কথায়, ‘বহু দরবার করার পরেও স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নে কোনওরকম নজর দেওয়া হয়নি। সত্তরের দশকে তৈরি এই স্কুলের অনেক শ্রেণিকক্ষ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। এক হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য শৌচাগার নেই। মিড-ডে মিলের ঘরের অবস্থাও খারাপ। কিন্তু এখানে আমার ত্রুটি কোথায়?’
প্রধান শিক্ষক সরাসরি শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত। তিনি আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সহকারি সভাপতিও বটে। ফলে এটা বিরোধীদের চক্রান্ত হতেও পারে বলে মনে করছেন এই স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নাম করে যে ভাবে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে তাতে আমি অবাক হয়েছি। এর পিছনে যদি কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি থাকে তাহলে আতঙ্কের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। থানায় এফআইআর করেছি। পুলিশের উপরে আমার পূর্ণ ভরসা রয়েছে।’
হুমকি চিঠি মিলল কী ভাবে?
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন প্রধান শিক্ষক ও অফিসরুমের দরজায় ঝোলানো দু’টি তালার সঙ্গে আরও একটি অতিরিক্ত তালা ঝোলানো ছিল। ওই তালার সঙ্গে সাঁটানো একটি খামের ভেতরে হুমকি চিঠি মেলে। খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে আসেন ভাটিবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ। তারা অতিরিক্ত তালাটি কেটে শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্কুলে ঢোকার ব্যবস্থা করে। ওই চিঠিতে স্কুলের দুরাবস্থার বর্ণনা ছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ নিশ্চিত, দু’টি ভাষায় লেখা হুমকি চিঠির বয়ান প্রায় এক। তবে চিঠির ভাষা এতটাই সাজানো গোছানো যে ওই চিঠির পিছনে পাকামাথা রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। হুমকি চিঠির পিছনে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (উচ্চ মাধ্যমিক) আশানুল করিম বলেন, ‘গোটা বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। আমিও জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে স্কুলটির পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ আসছে না। সমাধানের জন্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’