এ দিন মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘জয়নগরের মোয়া খাওয়াবেন তো? বাইরে থেকে যখন অতিথিরা আসবে অন্য কিছু গিফ্ট দেবেন না। একটা করে জয়নগরের মোয়ার প্যাকেট দেবেন। তাতে ব্যবসাও বাড়বে। আপনারা শুনলে খুশি হবেন, আপনাদের জয়নগরে একটা মোয়া হাব তৈরি করছি। প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়ে।’
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, হাব হলে জয়নগরের যত মোয়া সব এক ছাতার তলায় পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা পরিষেবা দেওয়ার নির্দিষ্ট জায়গা পাবেন। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘মোয়ার পাশাপাশি সুন্দরবনের মধু ও জিআই ট্যাগ পেয়েছে। আপনাদের এই জেলায় দুটো স্বর্ণপালক সংযোজিত হয়েছে।’
মূলত শীতের মরশুমেই মোয়া মেলে। সেই মোয়াকে বেশিদিন তাজা রাখা যায় না। যে কারণে গুণগত মান বজায় রাখা মুশকিল। সে জন্যই ব্যবসায়ীদের দাবি তৈরি হোক মোয়া হাব। সেই হাবে যন্ত্র বসানো হবে। থাকবে প্যাকেজিংয়ের সুব্যবস্থা। যেখানে মোয়া ব্যবসায়ীরা বিশেষ পদ্ধতিতে প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে মোয়াকে বেশিদিন তাজা রাখতে পারবেন। বজায় থাকবে গুণগত মানও।
ফলে বিদেশে মোয়া পাঠানোর ক্ষেত্রেও কোনও অন্তরায় থাকবে না। জয়নগরের বুকে মোয়ার হাব তৈরির দাবি অনেক দিন ধরেই করে আসছিলেন মোয়া ব্যবসায়ীরা। সেই দাবি বাস্তবায়িত করতে খাদি ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সহায়তায় মোয়া হাব তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু হাব তৈরির শুরুতেই সমস্যা হয় জমি বাছা নিয়ে। প্রথমে ঠিক হয়েছিল জয়নগরের নিমপীঠ এলাকায় মোয়া হাব হবে। পরবর্তীতে সেই জায়গা বদলে ময়দা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে বেছে নেওয়া হয়। পরে আবারও বদল। এ বার জয়নগর-মজিলপুর পুর এলাকার মিত্রগঞ্জ বাজারের কাছে হাব তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তও বাস্তবায়িত হয়নি।
বর্তমানে জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার ইন্দিরা উদ্যান সংলগ্ন একটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এখানেই হাব তৈরির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কবে সেই কাজ পূর্ণ গতি পাবে সে বিষয়ে সন্ধিহান অনেকেই। তবে মঙ্গলবার মোয়া হাব তৈরি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় আশার আলো দেখছেন মোয়া ব্যবসায়ী ও এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকেই।
জয়নগরের প্রতিষ্ঠিত মোয়া ব্যবসায়ী রাজেশ দাস বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন জয়নগরের মোয়া সারা বিশ্বের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার। কিন্তু গুণগতমান বজায় রাখা যায় না বলেই সমস্যা। তাও আমরা সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও চেষ্টা করে দেশের বাইরে মোয়া পাঠাই। জয়নগরের বুকে মোয়া হাব তৈরি হলে সেই সমস্যা পুরোপুরি মিটবে বলে আশা রাখি।’