12th Fail ছবির মূল চরিত্র রিয়েল লাইফের IPS মনোজ কুমার শর্মার সাদামাটা জীবন, সরলতায় গোটা দেশ এই মুহূর্তে বুঁদ হয়ে রয়েছে। ঠিক তখনই এ রাজ্যে উলটপূরাণ। WBCS অফিসারের ফেসবুক পোস্ট, ‘প্রাইভেট কোম্পানিতে ছোটখাটো কাজ করেন বা বেকার হয়ে বাড়িতে বসে আছেন, এমন কেউ প্লিজ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাবেন না।’ পোস্ট করেই থামেননি তিনি। পোস্টের পিছনে একের পর এক যুক্তি দিয়ে গিয়েছেন। এমনকী অধস্তন মহিলা অফিসারকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। WBCS অফিসারদের নানান গ্রুপে বুধবার বিষয়টি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সবমহলেই বিষয়টির নিন্দা করা হয়েছে। অভিযোগ, বাঁকুড়ার ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর প্রসূন কুমার চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।
জেলায় জেলায় বহু বছর ধরে প্রচারের আড়ালে থেকে বহু BCS অফিসার বেকার যুবক যুবতিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ-প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আসছেন। সরকারি চাকরি পেতে ‘বেকার’-দের সাহায্য করে চলেছেন। সেখানে একজন WBCS- গ্রুপ সি অফিসারের এমন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তাঁর প্রোফাইল জুড়ে এ. পি. জে. আব্দুল কালামের নানা উক্তি। ফোনের কলার টিউনে ভক্তিগীতি। কিন্তু তাঁর পোস্ট দেখে অবাক সকলেই। কেউ কেউ তাঁকে বিষয়টি নিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
এই সময় ডিজিটালে-র পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ফোন করা হয়েছিল তাঁকে। প্রশ্ন শুনে এড়িয়ে যাওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন তিনি। পরে মেজাজ হারিয়েই তাঁর উত্তর, ‘কার রিকোয়েস্ট আমি গ্রহণ করব সেটা আমার নিজস্ব ব্যাপার। এটা আমি লিখতেই পারি। আপনার (প্রতিবেদকের) পরামর্শ নিতে আমি চাই না।’
ফেসবুক জুড়েও তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ফেসবুকে এক জনৈক যুবকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি লিখেছেন, ‘একজন গ্রুপ এ গেজেটেড অফিসারের বন্ধু হওয়ার যোগ্যতা আপনার নেই।’ এমনকী আক্রমণ করতে ছাড়েননি সরকারি কর্মীদেরও। এক ব্লক ওয়েল ফেয়ার অফিসার বিষয়টি নিয়ে তাঁর নিন্দা করলে ওই অফিসারকে উদ্দেশ্যে করে তাঁর মন্তব্য, ‘আপনার কথা কেন শুনব… আপনাকে তো বিডিওর হয়ে ফরমায়েশ খাটতে হয়।’ সরকারি কর্মীদের নানা আন-অফিসিয়াল গ্রুপেও ঝড়ের গতিতে শেয়ার হতে থাকে বিষয়টি। জেলা প্রশাসনের অন্দরে এই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর কানাঘুষো। প্রশাসনিক মহলে তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
নবান্নের এক কর্তা বলছেন, ‘ঠিক কী উনি লিখেছেন তা না দেখে মন্তব্য করব না। তবে একজন সরকারি কর্তার সমাজ মাধ্যমে কিছু লেখার বা বলার আগে যথেষ্ট সাবধান হওয়া উচিত বলেই আমার মনে হয়।’ উদাহরণ দিয়ে আরেক কর্তা বলেছেন, ‘একজন IAS বা IPS অথবা WBCS গ্রুপ এ, বি অফিসার যদি ওঁর মতো গ্রুপ সি অফিসার বা লোয়ার ডিভিশনের কারও প্রতি সামান্যও অবমাননাকর কিছু বলে থাকেন তাও যেমন কাম্য নয়, তেমনই এরকম কিছু লেখাও ঠিক নয়।’ ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের এক কর্তা বলছেন, ‘বড় পদ বা চেয়ারে বসে এমন পোস্ট তো কারও করা উচিত নয়।’
যদিও এই সময় ডিজিটালের পক্ষ থেকে ফোন করার খানিক সময়ের মধ্যেই তিনি পোস্টটি ডিলিট করে দেন। নিজের সিদ্ধান্তে কেন অটল রইলেন না বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ওই ছাত্র তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।