Birbhum Police : বৃদ্ধাদের বিপদে সারথি হবেন তিনিই, টোটোর স্টিয়ারিং ধরলেন বীরভূমের লেডি কনস্টেবল – birbhum police lady constable chhabila khatun learning toto driving for helping her old age home


অসহায় বৃদ্ধা মায়েদের জন্য তাঁর নিরন্তর উদ্যোগ গোটা রাজ্য জুড়ে সমাদৃত। পেশাগত আয়ের অর্থ দিয়ে আশ্রয়স্থল গড়ে তুলেছেন মায়েদের জন্য। নিজের কর্মতৎপর জীবনের মাঝেও পাশে দাঁড়িয়েছেন একাধিক দুঃস্থ ব্যক্তির। এবার তাঁর বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থ জোগাড় করে কিনে ফেলেছেন একটি টোটো। আপদকালীন তিন চাকার অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহৃত হবে। কিন্তু, বিপদের মুহূর্তে টোটো চালক পাবেন কোথায়? এবার তাই নিজেই টোটো চালনার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বীরভূমের প্রসিদ্ধ বীরভূমের মহিলা পুলিশ কর্মী ছবিলা খাতুন ।

কী উদ্যোগ এবার?

বৃদ্ধাশ্রম তৈরি , টোটো কেনার পর এবার বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের জন্য টোটো চালানো শিখছেন বীরভূমের লেডি কনষ্টেবল । ছবিলা দেবীর দাবির কথায়, ‘এবার থেকে আর মায়েদের অসুস্থতায় কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য পরনির্ভরশীল হতে হবে না । কারণ এবার তাদের রথের সারথি হব আমিই ।’ নিজের উচ্চ মানসিকতা ও তার নজিরবিহীন কর্মকাণ্ডের জন্যই আজ জেলাবাসীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন তিনি । তবে শুধু জেলার মানুষই নয় আজ বাংলার অন্যান্য জেলার মানুষরাও তাঁকে চেনেন তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য ।

অসহায়দের জন্য উদ্যোগ ছবিলার

মূলত সমাজ পরিবর্তনের অদম্য ইচ্ছা ও চেষ্টাই তাকে সাধারণ থেকে অসাধারণ করে তুলেছে । যেমন, কিডনি নষ্ট হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়া সহকর্মীর ছেলের পড়ার দায়িত্ব নেওয়া । বা নিজের শখের চার চাকা গাড়ি বিক্রি করে ‘ স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস ‘ তৈরি করা । যদিও এটা কোন ট্রেন নয় । এক্সপ্রেস ট্রেনের আদলে তৈরি বৃদ্ধাশ্রম । ছবিলা দেবীর মতে, ‘যাঁরা থমকে ছিল, তাঁরা এগিয়ে যাবেন । ট্রেনে উঠে পড়লেই চলবে নিজের গতিতে । আর স্বপ্নপুরী নামের কারণ হল , যারা আসবে তাঁদের সবার স্বপ্ন পূরণ হবে। আমারও হবে।’

সেই স্বপ্নপূরী এক্সপ্রেস এ আজ অসহায় মায়ের সংখ্যা ২৫ । যদিও এখন তাঁদের আর অসহায় বলা যায়না । কারণ মায়েদের মতে , ‘এখন তাদের জন্য সর্বদা সহায় তাঁদের মা ছবিলা ।’এমনকি বৃদ্ধাশ্রমের মায়েরা এখন স্বপ্নপুরীকে ভালোবেসে বলেন স্বর্গপুরী ।
২৫ জন মাকে নিয়ে ছবিলার সেই স্বপ্নপুরী এক্সপ্রেস চলছিল দ্রুতগতিতেই । কিন্তু হঠাৎই দিন কয়েক আগে বৃদ্ধাশ্রম এর একজন আবাসিক মাথা ঘুরে পড়ে যান । আর তারপরই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি টোটো ডাকা হলে তারা কেও আসেননি । স্বাভাবিকভাবেই দেরিতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কারণে কিছুটা ব্যাহত হয় তার চিকিৎসা । আর এরপরেই বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের জন্য একটি টোটো কেনার সিদ্ধান্ত নেন ছবিলা খাতুন ।

কিন্তু কিনব বললেই তো আর হবে না, কিনতে গেলে লক্ষাধিক টাকা লাগবে । এদিকে বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করে জমানো পুঁজিও সব শেষ । তাই কার্যত বাধ্য হয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় টোটো কেনার কথা জানিয়ে আর্থিক সাহায্যের জন্য পোস্ট করেন । কিন্তু তা অনেকে দেখে থাকলেও, কেও সাহায্যের হাত বাড়াতে এগিয়ে আসেননি । টোটো কেনার কথা শুনে আর্থিক সাহায্য করতে শেষমেষ এগিয়ে আসেন এলাকারই একজন কাঠমিস্ত্রি নূর আলম মিয়া । নিজের মেয়েদের বিয়ের জন্য জমানো পুঁজি ভেঙেই কিনে দেন লাখ টাকার টোটো । কিন্তু টোটো কেনার পরেও যে নিশ্চিন্ত হতে পেরেছেন ছবিলা দেবী এমনটা নয়।

Satabdi Roy : জেলে কেষ্ট! জেলায় খেলছেন শতাব্দী, উইকেট কিপার কাজল! দেখুন ভিডিয়ো
কারণ, হঠাৎ প্রয়োজন হলে টোটো নিয়ে যাবে কে ? আবারো কি তাহলে কোনো জরুরী পরিস্থিতিতে পরনির্ভরশীল হতে হবে ? এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎই তাঁর মাথায় আসে, নিজে টোটো চালানো শিখলে কেমন হয়। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ । তাই কারোর ওপর ভরসা না করে এখন নিজেই টোটো চালানো শিখছেন ছবিলা খাতুন । আর শিক্ষকের ভূমিকায় রয়েছেন কাঠমিস্ত্রি নূর আলম মিঞা । ছবিলা দেবী জানান, ‘জরুরী পরিস্থিতিতে, যে কোন সময় বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের হাসপাতাল নিয়ে যেতে বা তাদের কখনো ঘোরাতে নিয়ে যেতে আর কারোর ওপর ভরসা করতে হবে না ।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *