আর পুলিশকে আদালতের নির্দেশ, অভিযোগপত্রটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে। এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক নির্যাতিতার স্বামীকে মারধর করা হয়নি এবং তিনি সুস্থ আছেন বলে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর হাইকোর্ট পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই রাজ্য প্রথম তদন্তকারী অফিসারকে সাসপেন্ড করেছিল। ইসলামপুরের আইসি’র বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশ, সেই বিভাগীয় তদন্ত দ্রুত শেষ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের আনন্দপুরে এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ আদালত বলার পরেও না নথিভুক্ত করায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশে সেখানকার ওসি’র বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে ২৭ অক্টোবর রাতে এক প্রভাবশালী রাজনীতিকের বাড়ির কালীমন্দিরে মূর্তির সোনার গয়না-সহ নানা সামগ্রী চুরি যায়। মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে তাঁকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। মামলাকারীর পরিবারের আইনজীবী নীলাদ্রিশেখর ঘোষ ও নাসের চৌধুরীর অভিযোগ, সেই সময়ে কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন না।
পুরুষ অফিসার মদ্যপ অবস্থায় মহিলাকে মারধর করেন। তিন দিন থানার লক-আপে রেখে মারধর করা হয়। পরে স্ত্রীর খোঁজ নিতে গেলে অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরের দিন ৩০ অক্টোবর গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। আর তাঁর স্ত্রীকে আদালতে হাজির না করেই পুলিশ ছেড়ে দেয়।
কোর্ট অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ। মেডিক্যাল কলেজ জানা
য়, তাঁর দু’টি কিডনিই বিকল। তার আগে জেল হাসপাতালের চিকিৎসক রিপোর্টে জানিয়েছিলেন, ওই ব্যক্তির দেহে কোনও আঘাত নেই। পরে আদালত জামিন দিলেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। কিন্তু ১৬ নভেম্বর থেকে তাঁর আর খোঁজ মিলছিল না।
হাইকোর্টে অভিযোগ জানানোর পরে পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তির অবস্থা খারাপ হওয়ায় শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা হয় হাইকোর্টে। তখন রাজ্য হাইকোর্টে জানায়, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তদন্তকারী অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ইসলামপুর থানার আইসি’র বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।