বৃহস্পতিবার থেকে বাউড়িপাড়ায় টোল সংগ্রহ শুরু করে দিয়েছে পঞ্চায়েত। নিজস্ব তহবিল বাড়ানো, এলাকার উন্নয়ন সমেত ৫ জন অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মীর বেতন দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে হিজলনা পঞ্চায়েতের তরফে। খবর পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার।
শুক্রবার তিনি সাফ বলেছেন, ‘জেলা পরিষদের রাস্তায় কোনও পঞ্চায়েত টোল বসাতে পারবে না। হিজলনা পঞ্চায়েতের বিষয়টি জানার পর আমি ফোনে সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় টোল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি। অফিস বন্ধ থাকায় লিখিত নির্দেশ দেওয়া যায়নি। সোমবারই সেটা দিয়ে দেওয়া হবে। কোনও ভাবে যদি এর পরেও টোল আদায় হয় তা হলে প্রয়োজনে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আমরা থানায় এফআইআর দায়ের করব। অনৈতিক কোনও কাজে আমাদের সমর্থন থাকবে না।’
জানা গিয়েছে, ১২ থেকে ১৬ চাকা গাড়ির ক্ষেত্রে ৩০০ টাকা এবং ম্যাটাডোর, ট্র্যাক্টর সমেত ছোট গাড়িগুলির ক্ষেত্রে ৫০ টাকা করে টোল নিচ্ছে পঞ্চায়েত। সূত্রের খবর, প্রথম দিনই টোল বাবদ হিজলনা পঞ্চায়েতের রোজগার হয়েছে প্রায় ৬১ হাজার টাকা। জেলা পরিষদের রাস্তায় টোল বসানো নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান মিঠু মণ্ডলের সাফাই, ‘পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল বাড়ানোর জন্য এ ছাড়া অন্য উপায়ও নেই। টোল বসানোর আবেদন নিয়ে একাধিকবার জেলা পরিষদের দ্বারস্থ হয়েছেন উপ প্রধান। লিখিত আবেদনও করেছেন। কিন্তু পরিষদের কেউ অনুমতি দেননি। টোল নেওয়া যাবে না সেটাও কিন্তু কেউ বলেননি। তাই আমরা বোর্ড মিটিং করে সকলের উপস্থিতিতেই দু’টি টোল বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
জেলায় ২৩৫টি পঞ্চায়েত রয়েছে। এ ভাবে সবাই যদি পূর্ত দপ্তর বা জেলা পরিষদের রাস্তায় টোল আদায়ে নামে তা হলে পরবর্তী দিনে আইন-শৃঙ্খলারও সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শুভলক্ষ্মী বসুর বক্তব্য, ‘কোনও পঞ্চায়েত জেলা পরিষদের রাস্তায় এ ভাবে টোল আদায় করতে পারে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’
যদিও পঞ্চায়েতের উপ প্রধান শেখ আইনালের দাবি, ‘আড়াই-তিন বছর আগেও এ ভাবে টোল নেওয়া হতো। আমরা সেটাই আবার চালু করেছি।’ জানা গিয়েছে, মূলত দামোদর থেকে বালি নিয়ে আসা লরি, ট্র্যাক্টর ও ডাম্পারদের কাছ থেকে এই টোল আদায় শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকালেও লরি ও ট্র্যাক্টরের কাছ থেকে আদায় হয়েছে টোল। ইতিমধ্যে কিছু লরির মালিক প্রশাসনিক মহলে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন।