Gangasagar Mela : সাগরযাত্রীদের ক্যাম্প থেকে ময়দানে দূষণ – kolkata air pollution rises due to gangasagar camp


কুবলয় বন্দ্যোপাধ্যায়

আকাঙ্ক্ষা পুণ্য অর্জনের, কিছু মানুষের সেই আকাঙ্ক্ষার জেরে ভয়াবহ বায়ুদূষণে প্রাণান্ত হচ্ছে কলকাতায়। গঙ্গাসাগরে মকরস্নানের জন্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন আসতে শুরু করেছেন কয়েক দিন হলো। সেই দলে সাধুসন্তদের সঙ্গে রয়েছেন বহু সাধারণ পুণ্যার্থী। এঁদের জন্যে ট্রানজিট ক্যাম্প হয়েছে ময়দানে। সেখানেই ধুনো জ্বালিয়ে কিছুটা দূরে দূরে বসে রয়েছে সাধুর দল।

আগুন নিভে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেও ছাই থেকে বেরিয়ে আসা ঘন ধোঁয়া আচ্ছন্ন করে রাখছে ময়দান চত্বর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপ-টু-ডেট হয়েছেন সাধুরা। তাঁদের হাতে উঠেছে স্মার্ট ফোন। কিন্তু ধুনি জ্বালানো ছাড়তে পারেননি। সেই সঙ্গেই খোলা আকাশের নীচে জ্বলছে কাঠের আগুন। দূষণে ভারাক্তান্ত শহরে বিপদ বাড়ছে।

মোহনবাগান মাঠের পাশে যেখানে ট্রানজ়িট ক্যাম্প চলছে তার নাক বরাবর কিছুটা এগোলেই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। ময়দান চত্বরের দূষণে লাগাম দিতে ভিক্টোরিয়াকে কেন্দ্র করে তিন কিলোমিটারের মধ্যে খোলা জায়গায় আগুন জ্বালানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কোর্টের। কিন্তু সে-সব শিকেয় উঠেছে। ফলে সকাল-সকালই ময়দান চত্বরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা বাতাসের গুণগত মান উঠে যাচ্ছে ২৭০-এর উপরে। পরিবেশবিদরা এই সূচককে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বলেই মনে করেন।

শীতকালে বাতাস ভারী থাকায় এমনিতেই বায়ুদূষণ বেশি থাকে। কিন্তু ময়দান চত্বরে বছরের এই সময়টা বায়ুদূষণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে গাছের পাতা পোড়ানো এবং গঙ্গাসাগরের ট্রানজ়িট ক্যাম্পকেই দায়ী করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীদের বড় অংশ। পরিবেশবিজ্ঞানী এবং পরিবেশরক্ষা বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘কোনও একটা শহরে বিশেষ কারণে যদি বহু মানুষের সমাগম ঘটে তা হলে জনস্বাস্থ্যের উপরে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। গঙ্গাসাগরের ট্রানজ়িট ক্যাম্পও ব্যতিক্রম নয়। প্রশাসনের এই বিষয়ে দ্রুত নজর দেওয়া উচিত।’

বর্ষীয়ান পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘যাঁরা আসেন, তাঁরা বাইরে থেকে আসেন। তাই আমাদের শহরের প্রতি তাঁদের মায়া-মমতা নেই। এঁরা কয়েক দিন পর চলে যান। কিন্তু শহরের এই প্রান্তকে দূষণপুরীতে পরিণত করে যান।’

Gangasagar Mela 2024 : গঙ্গাসাগর থেকে এয়ারলিফ্ট, দুই পুণ্যার্থী হাসপাতালে
তবো ট্রানজ়িট ক্যাম্পের দূষণে পাশ টানতে একাধিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার। তিনি বলেন, ‘ট্রানজ়িট ক্যাম্পে পর্যাপ্ত বায়ো-টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাইও হয়।’ কিন্তু খোলা জায়গায় কাঠের আগুন জ্বালানো যে বন্ধ করা যায়নি, তা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। মেয়র পারিষদ বলেন, ‘সাধুদের ধুনি জ্বালানোর প্রথা বহু পুরনো। রাতারাতি বন্ধ করা যাবে না। ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত না দিয়ে কী ভাবে কাঠের আগুন জ্বালানো বন্ধ করা যায়, সে নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *