Nursing College,প্রশিক্ষণ দিয়ে আয়াদের দক্ষ বানাতে উদ্যোগ – union skill development and entrepreneurship ministry initiative to make nurse skills through training


অনির্বাণ ঘোষ

আহামরি শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রথাগত প্রশিক্ষণ হয়তো এঁদের নেই। কিন্তু এই আয়াদের মতো লক্ষ লক্ষ মানুষ সারা দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার বুনিয়াদি কাজের সঙ্গে যুক্ত দিনের পর দিন। অথচ এতে একদিকে যেমন ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে, অন্যদিকে তেমনই আবার দক্ষ কর্মীর অভাবের কারণে এঁদের পরিষেবাকে অস্বীকারও করা যায় না। অতিমারী পর্বে এঁদের প্রয়োজনীয়তা এবং একই সঙ্গে এঁদের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠেছিল সারা দেশে। চাহিদা ও জোগানের মধ্যে এখনও রয়ে গিয়েছে বিরাট ফারাক।

সেই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় স্কিল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অন্তরপ্রেনরশিপ মন্ত্রক। তৈরি করা হয়েছে ‘হেলথকেয়ার সেক্টর স্কিল কাউন্সিল’ (এইচএসএসসি)। যারা একদিকে যেমন এই ধরনের কর্মীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সরকারি শংসাপত্র দেওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তাঁদের গ্রহণযোগ্য করে তুলছে, অন্যদিকে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী তৈরির লক্ষ্যে ব্যবস্থা করছে লাগাতার প্রশিক্ষণেরও। বাংলাও সামিল সেই অভিযানে। চলছে প্রশিক্ষণ। এবং ক্রমাগত বেড়ে চলেছে প্রশিক্ষণকেন্দ্রের সংখ্যা।

এইচএসএসসি-র পূর্বাঞ্চলীয় কো-অর্ডিনেটর স্বরূপ গোস্বামীর কথায়, ‘একদিকে কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে বলে মনে করে নতুন প্রজন্ম। অন্যদিকে আবার অনেক বেসরকারি সংস্থার বক্তব্য, যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীর অভাব রয়েছে। এই ফাঁকটারই সেতুবন্ধন করছি আমরা।’ তিনি জানান, বাংলায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জেনারেল ডিউটি অ্যাটেন্ডেন্ট (জিডিএ) এবং হোম হেলথ এইডের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

৭০০-৯০০ ঘণ্টার ট্রেনিংয়ের পর এঁদের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। লক্ষাধিক তরুণ-তরুণী ইতিমধ্যেই শংসাপত্র পেয়ে গিয়েছেন। এঁদের একটা বড় অংশ কাজও করছেন বিভিন্ন সংস্থায়। তবে এইচএসএসসি-র পূর্বঞ্চলীয় চেয়ারম্যান তথা আমরি হাসপাতাল গোষ্ঠীর সিইও রূপক বরুয়া জানাচ্ছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের আওতায় আসেনি, এমন কর্মীর সংখ্যাও লক্ষাধিক এই রাজ্যে।

তিনি বলেন, ‘অনেক কর্পোরেট সংস্থাও এখন হোমকেয়ার দেয়। সেখানে দারুণ সুযোগ এই কোর্স পাশ করলে। আমাদের আমরিতেও অনেকে চাকরি পেয়েছেন এবং ক্রমাগত পাচ্ছেনও। আমাদের পরিষেবার বহর বাড়ছে বলে এই ধরনের কর্মিবলের চাহিদাও তুঙ্গে।’ তিনি জানান, কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে প্রায় ৬০টি ট্রেনিং সেন্টার আছে। সংখ্যাটা লাগাতার বাড়ছেও।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এই কাউন্সিল করোনার পর কাজ শুরু করে। তখন সর্বভারতীয় চেয়ারম্যান ছিলেন বিখ্যাত চিকিৎসক দেবি শেট্টি। আর বর্তমানে ওই পদে রয়েছেন আর এক বিখ্যাত চিকিৎসক, গুরুগ্রামের মেদান্তা মেডিসিটি হাসপাতালের কর্ণধার নরেশ ট্রেহান। এখন শুধু মডার্ন মেডিসিনের স্বাস্থ্যকর্মীই নয়, আয়ুষ শাখার স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। আয়ুষের অধীন পঞ্চকর্মা থেরাপি, যোগ থেরাপি, যোগ অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো স্বাস্থ্যকর্মীও তৈরি করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে একটা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত হেলথকেয়ার ওয়ার্কফোর্স গড়ে তোলার লক্ষ্যে গঠিত এইচএসএসসি-র চার সদস্যের টাস্ক ফোর্সে অন্যতম সদস্য তথা প্রবীণদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে আসা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘বাঁচবো-হিলিং টাচ’-এর বয়স্করোগ বিশেষজ্ঞ ধীরেশ চৌধুরী বলেন, ‘সারা দেশে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজনীয়তা দিনে দিনে বাড়ছে। অথচ প্রয়োজনের তুলনায় জোগান সে অর্থে খুবই কম। হাসপাতাল, নার্সিংহোমের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়িতেও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। বরাবর যাঁদের আয়া বলা হয়, তাঁরা কিন্তু তাঁদের অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে পরিষেবাটা দিয়ে আসে। ওঁদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে।’

Utkarsh Bangla Courses : ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পড়েই স্বল্পমেয়াদী কোর্সের সুযোগ, রাজ্যের স্কিল ডেভেলপমেন্টে ২০ হাজার চাকরি
ধীরেশ জানাচ্ছেন, এই ভাবে ‘রেকগনিশন অফ প্রায়র লার্নিং’ বা আরপিএল প্রকল্পের মাধ্যমে ওই সব কর্মীদের একদিকে যেমন সামাজিক ও পেশাগত উত্তরণ হচ্ছে, তেমনই আমজনতাও এঁদের থেকে উন্নততর পরিষেবা পাচ্ছেন। কেননা, এই সার্টিফিকেটের মূল্য রয়েছে সারা দেশেই। এর ফলে তথাকথিত আয়া এবং কেয়ার গিভাররাও প্রশিক্ষিত হয়ে উঠবেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *