West Bengal Health Department,বেসরকারি নার্সিং কলেজ গড়তে ভাড়া সরকারি হাসপাতাল, বিতর্ক – west bengal health department interest in opening government hospital beds for private sector nursing colleges


অনির্বাণ ঘোষ

এই সময়: কোনও বেসরকারি সংস্থা হয়তো নার্সিং কলেজ গড়তে চায়। অর্থ, বাদবাকি পরিকাঠামো থাকলেও অভাব রয়েছে হাসপাতাল ভবনের। যে কারণে রোগী বা ক্লিনিক্যাল মেটেরিয়ালের অভাবে নার্সিং কলেজটাই আর গড়া হলো না। এমন পরিস্থিতি এড়িয়ে যাতে বেসরকারি সংস্থা নার্সিং কলেজ গড়ে তুলতে পারে, সে জন্য প্রস্তাবিত ওই সব কলেজের জন্য সরকারি হাসপাতালের বেড খুলে দেওয়ায় আগ্রহ দেখাল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর।

উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে — প্রয়োজনে বেসরকারি নার্সিং কলেজের জন্যও সরকারি হাসপাতালের একাংশ ভাড়ায় দেওয়া হবে। এ জন্য মোট ১৬টি সরকারি হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখানে গড়ে ৬০ থেকে ৮০টি আসনের নার্সিং কলেজ খোলা যাবে।

এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। ঠিক যেমন বিতর্ক তৈরি হয়েছিল ২০১৮ সালে। যখন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে সরকারি হাসপাতালের বেড ভাড়ায় দেওয়ার কথা হয়েছিল। বেশ ক’টি বেসরকারি সংস্থা এ নিয়ে আগ্রহ দেখালেও পিপিপি মডেলের সেই প্রস্তাব বাস্তবে তেমন সাফল্য পায়নি। নার্সিং কলেজের ক্ষেত্রে সাফল্য মিলবে কি না, সেটা বলবে সময়। তবে এখনই সরকারি এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’, ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’-এর মতো সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন।

তারা বিষয়টিকে সরকারি সম্পত্তি ও পরিকাঠামো বেচে দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করছে। সংগঠনের সদস্যদের মতে, এতে আগামী দিনে অনৈতিক স্বাস্থ্য ব্যবসাকে আরও প্রশ্রয় দেওয়া হবে সরকারি মদতেই। স্বাস্থ্যকর্তাদের অবশ্য যুক্তি, সার্বিক ভাবে রাজ্যে এবং বিশেষত জেলাস্তরে নার্সিং পঠনপাঠনে আরও উৎসাহ দিতে এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এখন যত সংখ্যায় নার্সিং স্টাফ দরকার, তত নার্স তৈরি করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সে জন্য দরকার বেসরকারি উদ্যোগ।

কিন্তু অনেক উদ্যোগই মাঠে মারা যাচ্ছে স্রেফ হাসপাতালের অভাবে। তাই সরকার ১৬টি হাসপাতালকে কাজে লাগাচ্ছে, যেখানে বেসরকারি নার্সিং কলেজ গড়ে উঠতে পারে। এতে সরকারি পরিষেবার বহর ও মান, দুটো উন্নতই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আপাতত স্থির হয়েছে, প্রথমে এককালীন ১০ বছর এবং পরে বড়জোর তিনটি নবীকরণের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৩৩ বছর এ ভাবে ভাড়ায় নার্সিং কলেজ চালাতে পারবে বেসরকারি সংস্থা।

Swasthya Sathi Card: স্বাস্থ্য সাথীতে বেনিয়ম বন্ধে বাইরের এজেন্সি, কড়া পদক্ষেপের পথে এ বার রাজ্য
এ জন্য মোটা অঙ্কের লিজ়ের ভাড়া গুনতে হবে তাদের। যত দিন না নিজেদের হাসপাতাল তৈরি করে নিতে পারবে, ততদিনই এই পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে বেসরকারি সংস্থা। এই কাজে যে ১৬টি সরকারি হাসপাতালের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলি হলো — ফুলবাগানের বিসি রায় শিশু হাসপাতাল, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল এবং শ্রীরামপুর ওয়ালস, গঙ্গারামপুর, ছাতনা, বনগাঁ, কালনা, ইসলামপুর, বারুইপুর, মালবাজার, ফালাকাটা, বড়জোড়া, গোপীবল্লভপুর, শালবনি, ডেবরা ও হলদিয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল।

আগামী ২৪ জানুয়ারি টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তার আগে ১৮ জানুয়ারি আগ্রহী সংস্থাগুলিকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে স্বাস্থ‌্যভবনে।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *