মৃতের নাম মৌমিতা ঘোষ (২৪)। বাড়ি শিলিগুড়িতে। সল্টলেকের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এমবিএ পড়তেন। সেই সূত্রেই বেলঘরিয়া যতীন দাস নগরের আকাশ আবাসনের দ্বিতীয় তলায় একটি ফ্ল্যাট গত দু’বছর ধরে ভাড়ায় নিয়ে থাকছিলেন। আবাসিকদের কথায়, প্রায়শই এক তরুণ ফ্ল্যাটে এসে আসতেন। তাঁরা জানতেন ছেলেটি মৌমিতার সম্পর্কে ভাই। কিন্তু এখন তাঁরা জানতে পেরেছেন ছেলেটির সঙ্গে মৌমিতার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
নিমতার বাসিন্দা ওই তরুণই এ দিন ফ্ল্যাটে এসে প্রথমে মৌমিতার নাম ধরে ডাকাডাকি করেন। সাড়াশব্দ না মেলায় আবাসিকদের জানান। এরপর সকলে মিলে বারান্দার ধারের জানালা দিয়ে উঁকি দিতেই দেখেন ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি বেঁধে ঝুলছেন মৌমিতা। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় বেলঘরিয়া থানায়৷ পুলিশ এসে দেহটি নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
তদন্তে উঠে এসেছে, রবিবার বেলঘরিয়াতেই বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন মৌমিতা। সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে কোনও একটি বিষয়ে গন্ডগোল হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নিমতার বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এ দিন তরুণীর ঘর থেকে ওই তরুণের মোবাইল ফোনটি পাওয়া গিয়েছে। যদিও ওই তরুণ পুলিশকে জানিয়েছেন, মৌমিতার মায়ের কথায় তিনি ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। অনেক ডাকাডাকি পর সাড়া না পেয়ে মোবাইল দিয়ে বারান্দার ধারের জানলা ঠেলতে গেলে মোবাইলটি জানলার পাল্লা গলে ঘরে গিয়ে পড়ে।
আবাসনেরই আবাসিক অংশুমান বসাক বলেন, ‘যে বন্ধুর কথা বলা হচ্ছে তাকে ভাই পরিচয় দিয়েই মৌমিতা ফ্ল্যাটে ভাড়া ছিল। মাঝেমধ্যেই ছেলেটি ফ্ল্যাটে এসে থাকত। এখন আমরা জানতে পারছি ছেলেটি ভাই নয়, মেয়েটির বন্ধু ছিল এবং লিভ ইন পার্টনার হিসেবেই থাকত।’
পুলিশ এদিনই শিলিগুড়িতে মৌমিতার বাড়িতে খবর পাঠায়। সেই মতো মা-বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়রা বেলঘরিয়ায় চলে এসেছেন। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘মেয়েটির পরিবারের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে পুলিশের তদন্ত চলছে।’