Calcutta High Court,পেনশন না-পেয়ে হাইকোর্টে বিদ্যাসাগরের সেই প্রিন্সিপাল – vidyasagar college principal sued calcutta high court for not getting pension after 11 months


জয় সাহা

১৪ মে ২০১৯। লোকসভা ভোটের ঠিক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর রোড শো চলাকালীন ভাঙচুর করা হয়েছিল বিদ্যাসাগর কলেজে। ভাঙা পড়েছিল বিদ্যাসাগরের মূর্তিও। সেই ঘটনা সবার আগে সংবাদমাধ্যম এবং মানুষের সামনে আনেন কলেজের সেই সময়কার প্রিন্সপাল গৌতম কুণ্ডু। লোকসভা ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদযাত্রা করে এসে গৌতমকে পাশে রেখেই মূর্তি পুনঃস্থাপন করেছিলেন।

তার পর কেটে গিয়েছে চার বছরের বেশি। সেই গৌতমকেই এখন প্রাপ্য আদায়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে! গৌতমের অভিযোগ, অবসরের পর ১১ মাস কেটে গেলেও পেনশন পাচ্ছেন না। তাঁর অভিযোগ অবশ্য যত না বেশি সরকারের বিরুদ্ধে, তার চেয়েও বেশি ফেলে আসা কলেজের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ, নানা অজুহাতে পেনশনের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠাচ্ছেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ। উচ্চশিক্ষা দপ্তরকেও নোটিস পাঠিয়ে জবাব মেলেনি। ফলে সুরাহা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন গৌতম। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর যদিও আশ্বাস, ‘বিষয়টা আমি জানি না। আমার কাছে কিছু এলে অবশ্যই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’

কলেজ কর্তৃপক্ষ আদালতে দাবি করেছেন, ২০১৫-১৬ থেকে কলেজের অডিট হয়নি। আদালত অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছে, কোনও অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত হতে পারে। কিন্তু পেনশনের ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ করা হলো, পরবর্তী শুনানিতে কলেজকে তা হলফনামা দিয়ে জানাতেও হবে। তবে গৌতমের দাবি, এর পরেও কলেজ পদক্ষেপ করেনি।

এই কলেজে বেশ কিছু বছর পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন অধুনা জেলবন্দি মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গত বছর গৌতমের অবসরের ঠিক আগে তিনি সরে যান। কিন্তু কেন তখন অডিটের কথা পরিচালন সমিতি তোলেনি? কেন কলেজের অর্থকরী বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত বারসর পদক্ষেপ করেননি–সে প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদ।

ঘটনাচক্রে গত বেশ কয়েক বছর ধরে যিনি কলেজের বারসর, তিনিই এখন ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল। অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এই ধরনের কোনও বিষয় থাকলে অবসরের এক বছর আগে তা ক্লিয়ার করার জন্যে নোটিস দিতে হয়। কিন্তু অবসরের পর কাউকে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা যায় না।’

University Of Calcutta: স্মার্ট ক্লাস, স্পেশাল টিচারে কলেজ চায় পড়ুয়া ফেরাতে
বিদ্যাসাগর কলেজে ৮ বছর অধ্যক্ষ ছিলেন গৌতম। তার আগে পড়াতেন সিটি কলেজে। গৌতমের কথায়, ‘আমার আট বছরের কর্মকালে কলেজের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। মূর্তি ভাঙার মতো ভয়ের আবহেও পিছপা হইনি। কিন্তু অবসরের পর প্রাপ্য আদায়ে যে আমাকে কোর্টের দরজায় ঘুরতে হবে–ভাবিনি।’

বিদ্যাসাগর কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল সুদীপা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘কলেজের ইন্টারনাল বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। তবে আমরা কখনওই চাই না কারও পেনশন আটকাক। উনি মামলা করেছেন। আদালত যা নির্দেশ দেবে, আমরা সেই মতো কাজ করতে বাধ্য।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *