বঙ্গ রাজনীতির ইতিহাস উলটে দেখলে দেখা যাবে, জ্যোতি বসুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় একাধিক ইস্যুতে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যুব কংগ্রেসের নেতৃত্বে গড়ে তুলেছিল আন্দোলন।
সেই সময় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বসতেন রাইটার্সে। তাঁর আপ্ত সহায়ক রাইটার্স ঘেরাও প্রসঙ্গ উত্থাপন করে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রাইটার্স ঘেরাও রয়েছে, আপনি আসতে পারবেন?’ এর জবাবে জ্যোতি বসু সেই সময় বলেছিলেন, ‘আজ যদি না যেতে পারি তাহলে আর কোনওদিন রাইটার্সে যেতে পারব না। তিনি গিয়েছিলেন। মহাকরণে সেদিন পুলিশি প্রহার নেমে আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর। সেই দিন শপথ নিয়েছিলেন তৎকালীন এই দাপুটে নেত্রী। ওই মহাকরণেই তিনি প্রবেশ করবেন। মাথা উঁচু করে এই প্রশাসনিক ভবনে তিনি প্রবেশ করবেন।
২০১০ সাল, পালাবদলের ঝড়ের পূর্বাভাস পাচ্ছিলেন অনেকেই। সেই বছরই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন জ্যোতি বসু। তাঁকে ১ জানুয়ারি ভর্তি করা হয় শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। কিন্তু, চিকিৎসকদের শত চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ১৭ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯১৪ সালে ৮ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন জ্যোতি বসু। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কার্যনির্বাহের সময় ছিল ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত। তিনিই রাজ্যের একমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি এখনও পর্যন্ত টানা ২৩ বছর ধরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে আসীন ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ-দৃষ্টিভঙ্গি নতুন প্রজন্মের কাছে সম্পদ বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।
প্রসঙ্গত, বঙ্গ রাজনীতি বরাবর সৈজন্যের নজির দেখে এসেছে। এর আগে রাজ্যের অপর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অসুস্থ থাকাকালীন তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নিয়মিত খোঁজখবর নিতেও দেখা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি কোভিডকালে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষ। সেই সময় তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে খোঁজ নিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।