প্রতি বছর, বিশেষ করে বর্ষাকালে খবরের শিরোনামে আসে গারুলিয়া কাঙালিঘাট। যার প্রধান কারণ গঙ্গার ভাঙন। ওই অঞ্চলের গঙ্গা তীরবর্তী বাসিন্দাদের আতঙ্ককে সঙ্গী করেই দিন কাটাতে হয়। কারণ গঙ্গা ভাঙনের জেরে ইতিমধ্যে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে পুরসভার সহযোগিতায় বাসিন্দাদের আশ্রয় নিতে হয়েছে অন্যত্র।
প্রশাসনিক স্তরে গঙ্গার ভাঙন রুখতে প্রাথমিক স্তরে সংস্কারের কাজও কয়েকবার হয়েছে। কিন্তু তা বেশি দিন টেকেনি। ফলে গত বর্ষাতেও আতঙ্ক এবং আশঙ্কা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি বাসিন্দারা। এ বার পাকাপাকি ভাবে শুরু হতে চলেছে কাঙালিঘাটে গঙ্গার ভাঙন রোধের কাজ।
কাঙালিঘাটে মোট ৩০০ মিটার অংশে সংস্কারের কাজ হবে। যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। যে ৯০ মিটার অংশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, সেখানে কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এই ৯০ মিটার অংশকে মাঝখানে রেখে দু’পাশে আরও ২১০ মিটার অংশে শাল বল্লা দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাঁধ নির্মাণ করা হবে গঙ্গার পাড় বরাবর।
যাতে আশপাশের অংশ কোনওরকম ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা ইতিমধ্যে গঙ্গার ঘাট পরিদর্শনও করে গিয়েছেন। সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দু’তিন দিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে সংস্কারের কাজ এবং আগামী ছ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৫ বছর ধরে গারুলিয়া কাঙালিঘাটে গঙ্গার পাড় বরাবর শুরু হয়েছিল গঙ্গা ভাঙন। গত সাত আট বছরে তা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ফি বছর বর্ষায় ভাঙনের কবলে পড়ে কারও বাড়ি গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে, কেউ আবার বিপদের আশঙ্কায় বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এ রকম ছ’টি পরিবারকে জমি এবং বাড়ির ব্যবস্থাও করে দিয়েছে পুরসভা।
গারুলিয়ার পুরপ্রধান রমেন দাস বলেন, ‘পার্থ ভৌমিক সেচমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি নিজে কাঙালিঘাট পর্যবেক্ষণ করেন। গত বর্ষায় প্রাথমিক ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি খুব শীঘ্রই পাকাপাকি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন।’ পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘ফি বছর কাঙালিঘাট অঞ্চলের মানুষ তাদের আশঙ্কার কথা আমাকে জানিয়ে ছিলেন। স্থানীয় পুরসভার তরফেও আমাকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছাতে অবশেষে আমরা পাকাপাকিভাবে কাজটা করতে পারছি।’