দম্পতির ইচ্ছা ছিল তাঁদের একমাত্র সন্তান অর্চিশার পঞ্চম জন্মদিন একটু অন্যভাবে পালন করবেন। সেইমত তারা ঠিক করেন উলুবেড়িয়ার আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে পালন করবেন মেয়ের জন্মদিন। আর তাই জন্মদিনে মেয়েকে পালকিতে চাপিয়ে স্কুলে নিয়ে যাবেন বলে স্থির করেন তাঁরা। সেইমত মঙ্গলবার মাঝি পরিবারের ৯০ জন সদস্য অর্চিশাকে পালকিতে চাপিয়ে স্কুলে হাজির হন। আর পালকি স্কুলে প্রবেশ করার পরেই বাহনটির কাছে ছুটে আসে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়ারা। নিজেদের হাতের স্পর্শে বাহনটির অজানা তথ্য সংগ্রহ করে শেষে তৃপ্তির হাসি হেসে সবাইকে জানিয়ে দেয় তাদের মনের আনন্দের কথা। কারণ এবার পালকির গান শুনলেই তারা বুঝতে পারবে আসলে ঠিক কোন বাহনটির কথা সেখানে বলা হচ্ছে।

পালকি ছুঁয়ে দেখছে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নরা
আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজয় দাস মনে করেন, নতুন প্রজন্মের কাছে এই বাহনটি প্রায় অজানা। দৃষ্টিহীনদের কাছে তো আরও বেশি করে। বাহনটি কার্যত অবলুপ্ত হলেও তা রয়ে গিয়েছে সাহিত্য, গানে, কবিতায়। তাই অর্চিশার জন্মদিনে আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলের পড়ুয়দের এই বিলুপ্ত বাহনটি স্পর্শ করার সুযোগ দেওয়া একটি বড় উদ্যোগ বলেই মনে করছেন প্রধান শিক্ষক। পাশাপাশি এটা অবশ্য স্কুলের পড়ুয়াদদের কাছেও একটি বড় পাওনা।
প্রসঙ্গত, কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘পালকি চলে পালকি চলে গগন তলে আগুন জ্বলে’ এক অমূল্য কবিতা। পরবর্তী সময়ে শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে পালকির গানও ভীষণই জনপ্রিয়তা পায়। যুগে যুগে সেই গান শুনে আসছেন শ্রোতারা। আর সেই গান শুনেই পালকি সম্পর্কে একটি কাল্পনিক ধারণা তৈরি হয়েছিল স্কুলের পড়ুয়াদের। এবার তাদের সঙ্গে পরিচয় হল বাস্তবের পালকির।