গত বছর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিন সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খাঁড়িতে ঘুরে সুন্দরবন এলাকার পাখিদের ছবি তুলেছেন, তথ্য সংগ্রহ করেছেন পাখিপ্রেমীরা। চলতি বছরেও একই ভাবে সুন্দরবনের গভীর অরণ্য লাগোয়া নদী ও খাঁড়িতে ঘুরে ঘুরে ছবি তোলার সুযোগ থাকছে পক্ষী প্রেমীদের জন্য। এবারের পাখি উৎসবে ২৫ জন পক্ষী প্রেমী সুযোগ পেয়েছেন। পাশাপাশি ৯ জন পাখি বিশারদও অংশগ্রহণ করেছেন উৎসবে। ইতিমধ্যেই ৬টি দলে বিভক্ত হয়ে সুন্দরবনের ৬টি রেঞ্জে রওনা দিয়েছে দলগুলি। আগামী তিনদিন তাঁরা যে ছবি তুলবেন এবং যে তথ্য সংগ্রহ করবেন সে সব বিচার বিশ্লেষণ করে একদিকে যেমন সুন্দরবনে বর্তমানে কত প্রজাতির পাখি রয়েছে সে বিষয়ে জানতে পারা যাবে, তেমনই ঠিক কোন কোন এলাকায় কী ধরণের পাখি রয়েছে সে বিষয়েও তথ্য পাওয়া যাবে। আর এই তথ্যই সুন্দরবনে পক্ষীকুলকে রক্ষার জন্য উপযোগী হবে বলেই দাবি বনদফতরের।
প্রথমবার পাখি উৎসবের রিপোর্ট বিচার-বিশ্লেষণ করে বন দফতর জানিয়েছিল, ১৪৫ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে সুন্দরবনে। পাঁচ হাজারের বেশি পাখির দর্শন পেয়েছিলেন উৎসবে যোগদানকারী পক্ষীপ্রেমীরা। গত বার ৫ হাজার ৬৫টি পাখির দেখা পেয়েছিলেন যোগদানকারীরা। সেবার শীতের একেবারে শেষ লগ্নে উৎসব আয়োজিত হয়েছিল। এবার আরও প্রায় মাসখানেক আগে এই উৎসব হওয়ায় অনেক বেশি পাখির দর্শন মিলবে বলে আশা বনদফতরের। শীত বেশি থাকায় অনেক বেশি পরিযায়ী পাখির দর্শন মিলবে বলেও মনে করছেন বনদফতরের কর্তারা।
গত বছরের পাখি উৎসব থেকে বন দফতর বেশকিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পক্ষীকূলকে রক্ষা করার জন্য। সেই মোতাবেক, শীতে যে সমস্ত পরিযায়ী পাখি সুন্দরবন এলাকায় আসে, তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। যাতে কোনও ভাবেই কেউ পাখি শিকার করতে না পারে, সেই দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য বাড়তি টহলদারি চালানো হচ্ছে বনদফতরের উদ্যোগে। শুধু সুন্দরবনের জঙ্গল এলাকাতেই নয়, আশপাশের লোকালয়গুলিতেও পাখিদের নিরাপত্তা বাড়াতে গ্রামবাসীদের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচার চালান হচ্ছে।