এ ব্যাপারে তিনি যে খুবই ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ তা ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন। সূত্র মাফিক খবর, তিনি বলেছেন, ‘কেউ রাজ্যের কাজে অসহযোগিতা করলে সেকশন ৫৬ (জে) মোতাবেক সোজা টার্মিনেট করে দিন। তারপর আমি দেখে নেব।’
কী এই ৫৬ (জে) ধারা? প্রশাসনের কর্তারা বলছেন , সরকারি মূল্যায়নে কোনও কর্মীর কাজ ‘অসন্তোষজনক’ চিহ্নিত হলে সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিসেস রুলের ৫৬ (জে) ধারায় তাঁকে সময়ের অনেক আগেই স্বেচ্ছাবসরে যেতে বলা হয়। আইন অনুযায়ী, সার্ভিস ব্রেক এবং অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যদিও এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রসেস রয়েছে। FR 56(j) , FR 56(I) অথবা 48 ধারা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরকারি কর্মচারিকে অবসর নিতে বাধ্য করতে পারে। সেটা অবশ্যই জনগণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় হলে তবেই। FR 56(j) তে বলা আছে, এক্ষেত্রে কোনও সরকারি কর্মীকে তিনমাস আগে নোটিশ দেওয়া যেতে পারে। অথবা তার পরিবর্তে তিন মাসের বেতন দিয়ে দেওয়া যেতে পারে। অর্থাৎ একদম কর্পোরেট কায়দা!
56 J of Rule এ কী আছে জানতে ক্লিক করুন
ফান্ডামেন্টাল রুলের ৫৬ (জে) আওতায় সরকারি কর্মচারীদের কাজকর্মের পর্যালোচনা এবং মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই অবসর সংক্রান্ত নীতিগুলির উল্লেখ রয়েছে। নিয়মিতভাবে এ সংক্রান্ত নীতিগুলি পর্যালোচনা করে কর্তব্যে গাফিলতি বা দুর্নীতি পরায়ণ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। কোন ধরনের অফিসারের ক্ষেত্রে তদন্ত কারা করবে নির্দেশিকায় তাও স্পষ্ট করা হয়েছে। যদিও রাজ্যেও এই নিয়ম চালু হচ্ছে কি না তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও বার্তা আসেনি। অনেকের মতে, সেক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস রুলে।
যদিও রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশের কাজের চাপে বর্তমানে নাস্তানাবুদ অবস্থা। মূলত ব্লকস্তরে বা জেলায় থাকা অফিসার এক্সটেনশন অফিসারদের দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে দিন দিন নির্বাচনের কাজের চাপ বাড়ছে। অনেকের আক্ষেপ, সে সব বিবেচনা না করেই এমন হুঁশিয়ারি আদতে অনেকের মনোবল নষ্ট করবে। যদিও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, দিনের পর দিন অনেক দফতরের কর্মীদের অফিসে গিয়ে তাঁকে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের বেশ কিছু তলায় গিয়ে নানান দফতরের কর্মীদের অনুপস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তাঁদের উদ্দেশ্যেই মূলত এই বার্তা দিতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক কর্তা বলছিলেন, ‘West Bengal Service Rule এ চেঞ্জ তো আনতে হবেই, যেটা আবার সময়সাপেক্ষও। সহজে হবেও না, এছাড়াও এর ভুল প্রয়োগের সম্ভবনাও প্রচুর। বিশেষ করে এখন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে সাধারণ মানুষের অভিযোগ কে এত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যে, যেকোন লোক যদি সরকারি কোন অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় তখন কী করবে সরকার? সরাসরি টার্মিনেট? বলা সহজ কিন্তু তা আদৌ করা সহজ না।’