অযোধ্যায় গুলি খাওয়ার ৩৫ বছর পরে ফের রামমন্দিরে! আসানসোল থেকে রওনা অভয়ের..।abhoy Baranwal karsevak going to ayodhya Ram Mandir to attend much-awaited Pran-Pratishtha on 22 january


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন আগেই। এবার ট্রেনে চেপে রওনা দিলেন আসানসোলের প্রৌঢ় অভয় বার্নাওয়াল। বাংলা থেকে যে দুজন এই আমন্ত্রণ পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে একজন আসানসোলের অভয়। রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছ্বসিত অভয়। ট্রেনে চাপার আগে তিনি জানান– এখন একা যাব কারণ, আমি একাই আমন্ত্রণ পেয়েছি। পরে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অযোধ্যা যাব। আসানসোল থেকে ট্রেনে চেপে সুলতানপুর স্টেশনে নামবেন তিনি। তার পর বাসে চাপবেন। বাস রামমন্দির কমিটিই তাঁদের জন্য ঠিক করে রেখেছেন।

আরও পড়ুন:  Jalpaiguri: অসম থেকে অযোধ্যা! ৭০ পেরিয়েও পায়ে হেঁটেই রামমন্দিরে চলেছেন ভবানীপ্রসাদ…

যে-রামমন্দির তৈরির জন্য একদা গুলি খেয়েছিলেন সেই রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা-অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া জন্য আমন্ত্রণপত্র পেয়ে একটা বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হল অভয়ের জীবনে। খুশিতে ডগমগ অভয় বার্নাওয়াল। ৫৩ বছরের অভয় আসানসোল হটন রোড মাস্টারপাড়ার আচলাবালা লেনের বাসিন্দা। ১৯৯০ সালের ৩০ অক্টোবর ‘করসেবক’ হয়ে অযোধ্যায় গিয়েছিলেন। সেখানে পুলিসের গুলি খেয়েছিলেন। অচৈতন্য অবস্থায় প্রথমে অযোধ্যায় শ্রীরাম হাসপাতালে, পরে ফৈজাবাদ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে সেখান থেকে আসানসোলে ইসিএলের কাল্লা হাসপাতালে। চিকিৎসা চলেছিল বহুদিন ধরে। ক্রমে সুস্থ হন। সেই ঘটনার তিন দশকেরও বেশি পরে রামমন্দির উদ্বোধন। সেই অনুষ্ঠানে হাজির থাকার আমন্ত্রণ পেয়ে খুশিতে উজ্জ্বল তিনি।

অভয় জানান, ১৯৯০ সালে ২১ অক্টোবর আসানসোল থেকে ৮৫ জন করসেবকের একটি দল শিয়ালদহ জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপেছিল। তাঁদেরই একজন ছিলেন অভয়। ট্রেন সকালে বেনারস স্টেশনে পৌঁছতেই পুলিস ধরপাকড় শুরু করে। করসেবকদের অনেকেই ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে-বলতে গ্রেফতার হন। তৎকালীন মুলায়ম সিং যাদব সরকারের পুলিস প্রায় ৯৯ শতাংশ করসেবককেই গ্রেফতার করেছিল। অভয় সেখান থেকে কোনও ভাবে বেরোতে পেরেছিলেন। বেরিয়ে প্রথমে গঙ্গার ঘাটে। গঙ্গা স্নান করে হাঁটা শুরু। উদ্দেশ্য অযোধ্যা। প্রায় ৩৫০ কিলোমিটারের মতো পথ পায়ে হেঁটে যেতে হয়েছিল তাঁকে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে! 

অভয় পরে জানান, যে রাস্তা দিয়ে তিনি সেদিন অযোধ্যা গিয়েছিলেন, সেই রাস্তায় কোনও সাধারণ মানুষ চলাচল করেন না। ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যেতে হয়েছিল। রাতে জঙ্গলেই এক গাছে উঠে রাত কাটাতে হয়েছিল। গাছের ডালে নিজেকে চাদর বেঁধে শুয়ে রাত কাটিয়েছিলেন অভয়। 

অক্টোবর অযোধ্যার সীমানায় পৌঁছে পরে স্বয়ংবর নগরে যান অভয়। ৩০ অক্টোবর সকাল-সকাল অযোধ্যায় পৌঁছে শ্রীরামের ধ্বজা নিয়ে চূড়ায় উঠে যান। নীচে নেমেই দেখেন, পুলিস করসেবকদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছে। অভয়ের সামনেই কয়েকজন গুলি খেয়ে পড়ে রয়েছে! এরই মধ্যে একজন করসেবক গুলি খেয়ে সাহায্য চাইছিলেন। সেই আর্ত সেবককে কোনও রকমে সেখান থেকে তুলে নিয়ে পালাতে যাওয়ার সময় অভয়েরও গায়ে গুলি লাগে, পায়ের হাড় ভেদ করে বেরিয়ে যায় গুলি! কিছুক্ষণ পরে তিনিও সেখানে লুটিয়ে পড়েন।

প্রায় তিনদিনের মাথায় তাঁর যখন জ্ঞান ফেরে তখন তিনি দেখেন, তিনি হাসপাতালে। অভয় বলেন, জ্ঞান ফেরার পর দেখি, আমার সামনে আমার বাবা দাঁড়িয়ে! বাবা আমায় আশীর্বাদ করে সেদিন বলেছিলেন, ‘সাবাস বেটা’! হাসপাতালে শুয়ে সেদিন বাবার মুখে এই কথা শুনে আমার শক্তি যেন বহুগুণ বেড়ে গিয়েছিল! অভয়কে সেদিন হাসপাতালে দেখতে এসেছিলেন তৎকালীন আরএসএস প্রধান রাজেন্দ্র সিং ওরফে, রাজু ভাইয়া।

আরও পড়ুন:  Ram Mandir on Cycle: সংকল্প! ক’মাস আগে বাদ গিয়েছে পা, এক পায়ে সাইকেল চালিয়েই অযোধ্যা চললেন সৌমিক…

প্রায় চার যুগ পরে রামমন্দির উদ্বোধন হচ্ছে জানতে পেরে খুশিতে আত্মহারা ছিলেন অভয়। আর সেখানে যাওয়ার আমন্ত্রণের চিঠি পেয়ে তিনি কদিন ধরেই আনন্দে ভাসছিলেন। আজ থেকে নতুন আনন্দ। যাত্রার আনন্দ। ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় পৌঁছবেন তিনি। তাঁর অযোধ্যাযাত্রার সময়ে তাঁকে আসানসোল স্টেশনে বিদায় জানাতে আসেন তার স্ত্রী কমলা ও অন্যান্য সাথীরা।।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *