প্রদ্যুৎ দাস: বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের লাইন পৌঁছলেও বছর পার হয়ে গেছে কল দিয়ে জল পরে না বলে অভিযোগ। চরম সমস্যায় জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের রাহুত নগর এলাকার বাসিন্দা। পানীয় জলের চরম সমস্যা রাহুতনগর এলাকার বাসিন্দাদের। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন রাহুতবাগান সংলগ্ন রাহুতনগর এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের সমস্যা মেটার নামই নিচ্ছে না। সরকারি উদ্যোগে বাড়ি বাড়ি কল বসলেও জল মিলে না এমনটাই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
কিছু কিছু বাসিন্দারা কয়েক দিন জল পেলেও দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কল থাকলেও জল নেই। কুয়োর জলই একমাত্র ভরসা। যদিও কুয়োর জল শুকিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে জল কষ্ট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে এলাকার বাসিন্দারা জানান। এলাকার বাসিন্দা পার্বতী দাস বলেন, দীর্ঘ সময় জলের ঘাটতি সহ্য করে দিন কাটাতে হচ্ছে। জলের কল বসলেও সেখান থেকে জল না। পড়ায় টিউবওয়েল ও কারও কারও বাড়িতে থাকা কুয়োই এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। তাতেও আয়রন থাকায় সেটাকে ফিল্টার করা আরেক সমস্যা। কতদিন এভাবে চলা যায়!
দীর্ঘদিনের এই জল সঙ্কটের জেরে রীতিমত ক্ষুব্ধ রাউত নগরের মানুষ। নিত্যদিনের পানীয় জল নিয়ে কিসের এত টালবাহানা? প্রশ্ন তো উঠছেই। কেন সরকার কিনবা পঞ্চায়েত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন না? এই প্রশ্ন স্থানীয় মানুষদের মুখে মুখে। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনরকম শব্দ খরচ করতে নারাজ প্রশাসনিক কর্তারা। সামনে লোকসভা ভোটে এই জল কষ্ট প্রধান হাতিয়ার হবে এই মানুষগুলোর কাছে। আগে জল তারপর ভোট এমনই বক্তব্য এলাকার বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা বিজয় দাস বলেন, বছর দেড়েক আগে বাড়ি বাড়ি সার্ভে করে ঠিকাদার সংস্থা তরফ থেকে নাম এবং আধার কার্ড জেরক্স নিয়ে প্রায় ২৫০-৩০০ বাড়িতে কল বসিয়ে যায়। কল বসলেও জল পড়ে না। আমাদের প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন জল আনতে হয়। কারও কারও বাড়িতে একবেলা জল আসত, আড়াই – তিন মাস ধরে সেটাও বন্ধ। কুয়োর জলও শুকিয়ে যাচ্ছে। কিভাবে চলব সেটা পঞ্চায়েতই বলে দিক।
অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজেশ মন্ডল স্বীকার করেন যে ওই এলাকায় জলের একটা ক্রাইসিস রয়েছে। তিনি বলেন, আগে নয়া পাড়াতে একটা রিজার্ভর ছিল। তখন স্ট্যান্ড পোস্টে জল দেওয়া হত। এখন সরকারের প্রতি ঘরে জল দেওয়ার প্রকল্পে জল অঞ্চলের নিচু এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমানেই সরবরাহ হচ্ছে। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের উচুঁ অঞ্চলগুলোতে জল পৌঁছতে একটু সমস্যা হচ্ছে। রাউতনগর, মুন্ডা বস্তি, রায় পাড়া, মোহিত নগর, সহ বিভিন্ন অঞ্চলগুলো উচুঁ জায়গায় বলে জলের ক্রাইসিস হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে পিএইচই এই অঞ্চলগুলোতে দুটি রিজার্ভর তৈরি করছে। আশা করছি আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে জলের সমস্যা মিটে যাবে।
জলপাইগুড়ি সদর বিডিও মিহির কর্মকার জানান, আমি সদ্য দু-তিন মাস হল কর্মভার নিয়েছি। জলের সমস্যা সংক্রান্ত কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। গ্রাম পঞ্চায়েত কিনবা জেলা পরিষদের মিটিংয়েও কেউ অভিযোগ জানায়নি। আপনাদের মুখ থেকে ঘটনাটি শুনলাম। সম্পূর্ণ বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)