বিপদ আঁচ করে কয়েক জন শিক্ষক ওই ছাত্রের পিছনে ধাওয়া করলে, চোখের নিমেষে ছাত্রটি স্কুলের প্রায় ছয় ফুট দেওয়াল টপকে পালায় বলে অভিযোগ। পালানোর সময়ে স্কুলে ঢোকার মূল গেটের ডান পাশের ঝোপে পড়ে যায় ওই পিস্তল আকারের বস্তুটি। পরিস্থিতির বিচারে তড়িঘড়ি মিড-ডে মিল খাইয়ে ওই দিনের মতো বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় আতঙ্কিত ছাত্রছাত্রীদের। খবর চাউর হতেই স্কুলের সামনে হামলে পড়েন উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। গেটের পাশের ওই ঝোপটিকে কর্ডন করে রাখেন স্কুলের শিক্ষকরাই। খবর যায় ফালাকাটা থানায়।
ততক্ষণে অবশ্য প্রায় হাজার দেড়েক ছাত্রছাত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে স্কুল চত্বর ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ আধিকারিকরা ছুটে এসে নিশ্চিত করে যে, আদতে নাইন এমএম পিস্তলের আকারে দেখতে ওই বস্তুটি একটি সাধারণ গ্যাস লাইটার। তাতেও শিক্ষক মহলের আতঙ্ক যাচ্ছিল না। শেষে পুলিশ অফিসার প্রাণজিত ঘোষ হাতেকলমে ওই লাইটারটিকে পরীক্ষা করে দেখানোর পর হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন সবাই।
তবে ঘটনায় উদ্বিগ্ন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তরফে প্রশ্ন উঠেছে, নিছকই কি খেলার ছলে অভিযুক্ত ছাত্রটি ওই পিস্তলের মতো দেখতে গ্যাস লাইটারটি স্কুলে এনেছিল? নাকি স্কুলে আতঙ্ক তৈরি করার মতলব ছিল তার? স্কুল কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছেন যে, সম্প্রতি বাড়িতে কাউকে কিছু না জানিয়ে অনলাইনে ওই গ্যাস লাইটার কিনেছিল ছাত্রটি। তার কাউন্সেলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্যাস লাইটারটির আকার যেমন, তাতে রাতের অন্ধকারে কারও সামনে তাক করলে, সে তার সর্বস্ব দিয়ে দিতে বাধ্য। আমাদের উদ্বেগের জায়গাটি এখানেই।’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ সরকার বলেন, ‘ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন এবং এই ধরনের আচরণ একেবারেই অনভিপ্রেত।’