লোকসভা নির্বাচনে দলের সাফল্য ধরে রাখতে তৃণমূল কংগ্রেস বীরভূমের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে ব্যাপক রদবদল করেছে। জেলার ২১টি ব্লক সভাপতির মধ্যে ৫ জনকে বদলি করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক। এই ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামাতো ভাই তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মীয় নীহার মুখোপাধ্যায়কে। ২০২২ সালের ২১ মার্চ বগটুইকাণ্ডে তৎকালীন রামপুরহাট ১ নম্বরের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন গ্রেফতারের পর এই ব্লকের সভাপতি পদে বহাল করা হয় সৈয়দ সিরাজ জিম্মিকে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকের সভাপতিদের তালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই তালিকায় বীরভূমের ১৯ জন ব্লক সভাপতির মধ্যে পাঁচটি ব্লক সভাপতি বদল করা হয়েছে। তবে খোয়রাশোল ব্লকে কোন কোনও ব্লক সভাপতি নেই। সেখানে প্রাক্তন ব্লক সভাপতি কাঞ্চন মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে পাঁচজনের কমিটি গঠন করে ব্লক পরিচালনা করার পথে হাঁটছে দল, সূত্রের খবর এমনটাই।
অনুব্রত মণ্ডলকে গোরু পাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকেই তিনি বিচারাধীন বন্দি। যদিও বীরভূম জেলায় তৃণমূলের দায়িত্ব রয়েছে তাঁরই কাঁধে। অনুব্রত ওরফে কেষ্টর অবর্তমানে এই জেলার সাংগঠনিক কাজের উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ৯ জনের একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
বীরভূমের রাজনীতিতে রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গত লোকসভা, একুশের বিধানসভা ও ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে অনেক বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। রামপুরহাট ১ ব্লকের কুসুম্বা গ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামার বাড়ি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই এলাকায় মামাতো বৌদি পম্পা মুখোপাধ্যায় সহ আরও দুই তৃণমূল কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপির প্রার্থীরা। সেই সময় থেকেই ব্লকের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মিকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
এদিকে সৈয়দ সিরাজ জিম্মিকে সরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামাতো ভাই নীহার মুখোপাধ্যায়কে ব্লক সভাপতি করা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিরোধীদের পরিবারতন্ত্রের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। তাঁদের কথায়, অন্যান্য জেলার মতো বীরভূমেও সাংগঠনিক বদল হয়েছে।