West Bengal Primary Teacher Recruitment: ‘প্রেমটা ফসকে গিয়েছিল…’, ৬২টিতে সরকারি চাকরি পেয়ে ‘বেলা বোস’-কে হারানোর আক্ষেপ দীনবন্ধুদের – hooghly person dinabandhu bhattacharya and kalyan banerjee talks about their real life bela bose after receiving government job at the age of 62


সুজয় মুখোপাধ্যায়| এই সময় ডিজিটাল
বয়স সামনের দুটো দাঁত গিলে খেয়েছে। গালে খোঁচা খোঁচা সাদা দাড়ি, চুলে সাদা রংয়ের ছায়া থেকে ইতি-উতি উঁকি দিচ্ছে কালো চুল। চশমায় ঢাকা চোখে আজই সেই ছেড়ে যাওয়া ‘স্বার্থপর প্রেমিকার’ জন্য আক্ষেপ। জীবনে সেই বেলা বোস হয়তো রোজ মাংস ভাত চেয়েছিলেন। কিন্তু, সরকারি চাকরি না পাওয়ায় বেকার প্রেমিককে কাঁচি করে তিনি দৌড় লাগিয়েছিলেন একটু নিরাপত্তার খোঁজে।

এদিকে বয়সও একটু একটু করে ৬০-এর গণ্ডি পার হয়েছে। অবসর নেওয়ার বয়সে হাতে সরকারি নিয়োগপত্র। দীনবন্ধুর হাপিত্যেশ-‘হায় বেলা সেদিন যদি ভরসা করতে!’ তবে সেই বিষাদ প্রেমপর্ব পার করে কঠিন সময়েও হাত ধরেছেন এক কন্যা। এই ষাটে এসে তাঁকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাতে ইচ্ছে করছে এই প্রবীণের। ‘তোকে নিয়ে বিলেত যাব…’ গাওয়ার পাটা না থাকলেও দুই কন্যার ভবিষ্যত গড়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কালীধন বন্দ্যোপাধ্যায়।

সম্প্রতি প্রাথমিকে চাকরি পেয়েছেন হুগলির ৬২ জন। তাঁদের মধ্য়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই। বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ হুগলি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের।

১৯৮৩ সাল থেকে চাকরির জন্য লড়ছিলেন তাঁরা। তখন তাঁরা ‘জওয়ান’। চোখে রঙিন স্বপ্ন। হাল ফিলের ফ্যাশন মহলে ঝড় তোলা বেল বটম প্যান্ট পরে প্রেমিকার হাতে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার ইচ্ছেটা অনেকই অপূর্ণ থেকে গিয়েছে। পালার পর পালা এসেছে, পালা বদলেছে-কিন্তু, নিয়োগ মেলেনি তাঁদের।

অবশেষে গত বছর ২০ ডিসেম্বর তাঁদের পক্ষে রায় দেয় আদালত। এরপরেই এই নিয়োগপত্র। কিন্তু, হায় বয়স! ক্ষতিপূরণ মিলবে! তাও অনিশ্চিত। কিন্তু, সবে ধন নীলমনি ওই নিয়োগপত্রগুলি।

শীত আর খুশির আমেজ গায়ে মেয়ে কালীধন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার বউ খুব ভালো। দাবি দাওয়াহীন। এরসময় পুজো করতাম। আর যজমানদের দেওয়া চাল-ডালে সংসার চলেছে। জীবনে কখনও আলাদা করে প্রেম আসেনি। এখন টাকা পেয়ে দুটো মেয়ের জন্য কিছু করব। আর বউয়ের যে ইচ্ছেগুলো এতদিন অপূর্ণ থেকে গিয়েছিল সেগুলো পূরণ করব।’

অন্যদিকে, প্রেম কেটে যাওয়ার আফসোস দীনবন্ধু ভট্টাচার্যের কণ্ঠে। ৫০ পয়সার ঘুগনি আর চার আনার পাউরুটিতেই খুশি হতেন মনের ধুকপুকানি বাড়ানো সেই কন্যা। কিন্তু, হায়! সরকারি চাকুরে হতে গিয়ে ধাক্কা খাওয়া তরুণের পকেটে ছিল না সেটুকুও।

Primary Teacher : কেউ ৬০ পেরিয়েছেন, কারও হয়েছে মৃত্যু! হুগলিতে প্রাথমিকের নিয়োগপত্র ঘিরে শোরগোল
তার উপর মামলা লড়তে গিয়ে দেড় বিঘে জমির এক বিঘেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। গাল তোবড়ানো বুড়ো চেহারার মানুষটা আজ ঝকঝকে অ্যাপোয়েন্ট লেটারটা দেখিয়ে বলতেই পারেন, ‘চাকরিটা আমি পেয়েগেছি ওগো শুনছ…’। কিন্তু, উলটো পারে ফাইভ জি কানেকশন তো দূরে থাক, নেটওয়ার্কটুকু নেই।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *