রাজ্য সড়কের উপর পারমিটবিহীন অটো ও টোটোর দাপটে লোকসানের মুখে যাত্রীবাহী বাস মালিকরা। বাস কর্মীরাও রুটি রুজি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। আগামী সোমবারের মধ্যে সমস্যা না মিটলে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলায় বাস পরিষেবা বন্ধ করার হুমকি দিলেন বাস পরিবহণ সংস্থার জেলা সম্পাদক।
রাজ্য সড়কের উপর বিনা পারমিটের অটো ও টোটো চলাচল নিয়ে বহুদিন ধরে কার্যত সংঘাত চলছে। এই নিয়ে বাস মালিকদের ইউনিয়নের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আবার একদিনের জন্য প্রতীকী বাস ধর্মঘটেরও ডাক দেওয়া হয়েছিল।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারের পরিবহণ সচিব এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন, রাজ্য সড়কের উপর বিনা পারমিটের অটো ও টোটো চালানো যাবে না। কিন্তু, সেই নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জেলায় এখনও রাজ্য সড়কগুলিতে ও জাতীয় সড়কে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অবাধে চলছে অটো ও টোটো।
জেলা বাস মালিক ইউনিয়নের সম্পাদক তপন কুমার অধিকারী বলেন, ‘ রাজ্য পরিবহণ সচিবের নির্দেশিকা জারির পরেও প্রশানের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আগের মতোই রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করছে বিনা পারমিটের অটো ও টোটো। ফলে যাত্রীবাহী বাস মালিকরা সমস্যায় পড়েছেন। এর প্রতিকারের জন্যই আমরা ধর্মঘটের পথে হাঁটছি।’
কান্দি বাস মালিক সিন্ডিকেটের সম্পাদক সঞ্জীব চক্রবর্তী বলেন, ‘কান্দি বহরমপুর রাজ্য সড়ক থেকে কান্দি সালার সহ এলাকায় যেসব রাজ্য সড়ক রয়েছে সবকটিতেই বিনা পারমিটের অটো ও টোটো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বিভিন্ন সময় অটো, টোটোর চালকরা বাস কর্মীদের সঙ্গে অশান্তি করছেন। ফলে আন্দোলনে নামা ছাড়া আমাদের উপায় থাকছে না।’
এদিকে বৃহস্পতিবার কান্দি নেতাজি বাস টার্মিনাস এলাকায় বেসরকারি বাস পরিবহণ সংস্থার পক্ষ থেকে একটি সভা করা হয়েছে। সেখানে হাজির ছিলেন জেলা বাস ওনার্স কাউন্সিলের সম্পাদক তপন কুমার অধিকারী। তিনি বলেন, ‘বাস ধর্মঘট করার পক্ষে আমরা নই। কিন্তু, পরিস্থিতি এমনই যে ধর্মঘটে যাওয়া ছাড়া আমাদের উপায় নেই। তাই রাজ্য সড়কের উপর বিনা পারমিটের অটো ও টোটো চলাচল বন্ধ না হলে আগামী সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলায় বাস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
এদিকে বাস মালিকদের এই সিদ্ধান্তে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বাস কর্মীদের। তাঁদের দাবি, ‘করোনা আবহে তাঁদের অনেকে কর্মহীন হয়েছেন। তাঁরা নো ওয়ার্ক নো পে হিসাবে কাজ করেন।’ পরিবহণ শ্রমিকদের দাবি, আবার নতুন করে বাস ধর্মঘটে গেলে মজুরিও পাওয়া যাবে না। কাজেই সোমবারের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা।
মুর্শিদাবাদ জেলায় ৫০০-র বেশি বেসরকারি বাস চলাচল করে। প্রায় পাঁচ হাজার ২০০ জন পরিবহণ শ্রমিক কাজ করেন। মুর্শিদাবাদ মোটর শ্রমিক সমম্বয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি রঞ্জিত ঘোষ বলেন, ‘এভাবে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে শ্রমিকদের রুটিরুজিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে মিটিয়ে নিতে পারত।’