নাগাল্যান্ডের প্রত্যন্ত প্রান্তে চিজ়ামি গ্রামের বাসিন্দা সেনো ত্সুহার লড়াইয়ের ধরনটা আবার একেবারে অন্যরকম। স্কুলে পড়িয়েই তাঁর দায়িত্ব শেষ হয় না। এর পাশাপাশি তাঁকে গ্রামে নিজেদের জমি চাষ করার পাশাপাশি এলাকার হতদরিদ্র মানুষগুলোকে পুরোপুরি নিজের উদ্যোগে পড়াশোনা শেখানোর কাজও করতে হয়। শহর ও তথাকথিত সভ্যতা থেকে বহু দূরে তাঁর গ্রামের অবস্থান হওয়ার জন্য জীবনধারণের সামান্যতম উপকরণগুলোও সেখানে পেতে গেলে মাথার ঘাম পায়ে পড়ে। নিজের এলাকার নিত্যদিনের জীবনযুদ্ধের কথা শোনালেন তিনিও।
ইউএসএ, চিন, জাপান, সাউথ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নরওয়ে, হাঙ্গেরি এবং আয়োজক দেশ ভারত-সহ মোট ১১টি দেশের কয়েকশো প্রতিনিধিকে নিয়ে দু’দিনের আন্তর্জাতিক সেমিনার হয়ে গেল ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগ আয়োজিত এই সেমিনারে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা ছাড়াও যোগ দিতে এসেছিলেন দেশের ২৫টি রাজ্যের ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা। সেমিনারে ১৬০-এর বেশি পেপার পড়া হয়। গোটা সেমিনারটি পরিচালনা করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা
বিভাগের অধ্যাপিকা সন্তোষী হালদার। সেমিনার বাস্তবায়িত করতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছিল ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনে থাকা জাতীয় গ্রন্থাগারও। এছাড়াও এই সেমিনারে ভারতীয় সামাজ বিজ্ঞান অনুসন্ধান পরিষদ (ICSSR) আর্থিক সহযোগিতা করেছিল।
এই সেমিনারে যোগ দিতে এসেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত (দে), জাতীয় গ্রন্থাগারের অধিকর্তা অধ্যাপক অজয়প্রতাপ সিং, কলকাতার মার্কিন কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পাভেক, জেমস ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা রত্না ঘোষ, এবং জাপানের হিরোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ইনস্টিটিউট ফর ডাইভারসিটি অ্যান্ড ইনক্লুশান এর ডিরেক্টর অধ্যাপক নরিমুনে কোয়াই।
সেমিনারের অন্যতম আকর্ষক বিষয় ছিল প্রান্তিক এবং আর্থ-সামাজিকভাবে সুবিধা-বঞ্চিত মানুষজনের মুখ থেকে তাঁদের জীবনের কাহিনী শোনা। এই সেমিনার প্রসঙ্গে অধ্যাপিকা সন্তোষী হালদার বলেন, ‘পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া কোনও ভাবেই একটি স্থিতিশীল এবং ন্যায়সঙ্গত সমাজ গঠন করা সম্ভব নয়।’
অধ্যাপিকা বলেন, ‘অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল মানুষরাই শুধু নন, একই সঙ্গে এলজিবিটিকিউয়ের মতো মানুষজনদের নিয়েও সমাজের একটা বড় অংশই খুব স্বচ্ছন্দ্য নয়। সমাজের এই বিবিধ বৈচিত্র্যকে মেনে নিয়েই আমাদের চলতে হবে।’