কী জানা যাচ্ছে?
চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে উলুবেড়িয়ার একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের ১২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল হাওড়া জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। রোগীর পরিবারের হাতে সেই ক্ষতিপূরণের অর্থ তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।
কী ঘটনা ঘটেছে?
ঘটনাটি ঘটে প্রায় ১৭ বছর আগে। ২০০৭ সালের ১৯শে নভেম্বরের। রাজাপুর থানার তুলসীবেড়িয়ার অভিরামপুরের বাসিন্দা বর্ষালী দেঁড়ের প্রসব বেদনা শুরু হয় দুপুরে। দুপুর দুটো নাগাদ তাঁকে নিয়ে আসা হয় উলুবেড়িয়ার এক নার্সিংহোম। সে সময় চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন সুনীল চক্রবর্তী। ওইদিনই বিকেল পাঁচটা নাগাদ বর্ষালী একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। সন্তান প্রসবের পর মৃত্যু হয় বর্ষালী দেবীর।
বর্ষালী দেবীর স্বামী শান্তি দেঁড়ে জানান, কিছুক্ষণ পর নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে জানায় পুত্র সন্তান সুস্থ রয়েছে কিন্তু তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে তুলে শান্তিবাবু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকের নামে উলুবেড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ওই মামলা নিয়ে ২০০৯ সালে তিনি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন। এরপর স্টেট সেন্ট্রাল কমিশন ঘুরে পুনরায় মামলাটি হাওড়া জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আসে।
দীর্ঘদিন মামলা চলার পর উপযুক্ত প্রমাণ ও তথ্যের ভিত্তিতে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসককে মৃতার পরিবারকে ১২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। রায়ে ক্ষতিপূরণের টাকা মৃতার দুই নাবালক সন্তানের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করতে বলা হয়েছে। আদালতের রায় শুনে আনন্দিত বর্ষালী দেবীর পরিবারের লোকজন। শান্তি দেঁড়ে জানান, এই রায় আমি খুবই খুশি। ক্ষতিপূরণের অর্থ বর্ষালী দেবীর ছেলের ভবিষ্যত গড়তে অনেকটাই সহায়তা করবে বলে জানান তিনি। এদিকে অভিযুক্ত নার্সিং হোমের মালিক প্রসাদ মান্না বলেন, ‘এই রায়ে আমরা হতাশ। কারণ চিকিৎসায় আমাদের কোন গাফিলতি ছিল না। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’