হুগলি জেলার গুপ্তিপাড়ার রাম মন্দিরে অধিষ্ঠিত শ্রী রামচন্দ্র সীতা ও লক্ষ্মণ। রামের গায়ের রঙ সবুজ হলেও সীতা আর লক্ষ্মণ এখানে অশতি পুষ্প রঙের। তাঁদের সামনে রয়েছে কৃষ্ণকায় হনুমান। নিম কাঠের তৈরি এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন রাজা হরিশচন্দ্র রায়। অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে গুপ্তিপাড়ায় বৃন্দাবন চন্দ্র জিউ মঠ তৈরী হয়। সেই মঠের চৌহদ্দিতে রয়েছে বৃন্দাবন জিউ এর মন্দির। কৃষ্ণের মন্দির, রামচন্দ্রের মন্দির ও নিতাই গৌরের মন্দির বা জোরা বাংলো।
রামের মন্দির টেরাকোটার। সেখানেই নিত্য পুজো হয় সারা বছর। রামনবমীতে আগে উৎসব হত এখন নমনম করে সারা হয় পুজো। তবে বৃন্দাবন জিউ এর জগন্নাথের রথযাত্রা হয় সবচেয়ে ধুমধাম করে। হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। ভারতের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এই মন্দির গুলির দেখভাল করে।
মন্দিরের কমিটির সদস্য সামন্তক গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পাঁচশ বছর পর অযোধ্যায় রামলালা প্রতিষ্ঠা হবে এতে আমরা খুশি। গুপ্তিপাড়ার রাম মন্দিরে ভক্তরা আসবেন। পুজো দেবেন। পুরোহিত থাকবেন সারাদিন। রথযাত্রা ও ভান্ডার লুট বৃন্দাবন জিউ এর বড় উৎসব। গোটা বছরই এই মন্দিরে অগণিত ভক্ত আসেন। রামলালা প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে আলদা করে কোনও ব্যবস্থা হবে না। তবে কেউ পুজো দিতে চাইলে দিতে পারবেন।
পুরোহিত শিববেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘চার মন্দিরে নিত্য সেবা হয়। প্রাচীন মূর্তি রয়েছে। আগে রামচন্দ্রের পুজো হত আলাদা করে। এখন সেসব হয়না। লোকবল কম থাকায় রামচন্দ্রকে নিয়ে আলাদা করে উন্মাদনা নেই।’ ইতিহাস বলছে, গুপ্তিপাড়াতেই পাটমহলে রয়েছে রঘুনাথ জিউ মন্দির। যেখানে রাম সীতা লক্ষ্মণের মূর্তি পুজো হয়। রামানন্দ অধিকারী প্রতিষ্ঠা করেন এই মন্দির। পরবর্তীকালে ভাগীরথীর গতি পথ পরিবর্তনে মন্দির ধ্বংস হয়ে যায়।
পরে সেই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে এসে দূর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করেন। সেখাই রামের পুজো হয়। রামনবমী উপলক্ষে মেলা বসে। বেণীমাধব শীলের পঞ্জিকায় এই পাট মোহলের রামনবমীর উল্লেখ আছে। আগামী কাল রাম জন্মভূমিতে হবে রামলালার প্রতিষ্ঠা তবে তার জন্য অবশ্য আলাদা কিছু হবে না। নিত্য পুজো যেমন হয়, তেমনই হবে জানান এই রামচন্দ্রের পুজোয় যুক্তরা।